আবারও সীমান্তে সংঘর্ষ বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ। ত্রিপুরা সীমান্তে উঁচু বাঁধ নির্মাণ করলো বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বিএসএফের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সীমান্তের জিরো পয়েন্টে চলছে বাঁধ নির্মাণের কাজ। স্বাভাবিকভাবেই দুই দেশের মধ্যে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। উদ্বেগ বাড়ছে ত্রিপুরার বিস্তীর্ণ এলাকায়। ত্রিপুরার উনকোতি জেলা প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
মৌলভীবাজার সীমান্তের পাশেই অবস্থিত ভারতের ত্রিপুরার উনকোতি বিভাগ। সেখানকার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাংলাদেশের এ বাঁধের কারণে ভারত বড় আকারের বন্যার ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ওই স্থানে ভারতের তৈরি একটি বাঁধ আছে। তবে কয়েক দশক আগে নির্মিত এ বাঁধটি বাংলাদেশের বাঁধের চেয়ে অনেকটা নিচু।
গত বুধবার ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা রাজ্যসভায় জানান, বাংলাদেশের এ বাঁধ নির্মাণ নিয়ে কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। কংগ্রেসের আইনপ্রণেতা বিরাজিত সিনহা রাজ্যসভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন।
ভারতের উনকোতি বিভাগের বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট দিলীপ কুমার চাকমা সাংবাদিকদের গত শুক্রবার বলেন, “মনে হচ্ছে বাংলাদেশের বাঁধটি স্থায়ী এবং উঁচু। এটি সীমান্তের জিরো পয়েন্টের ঠিক পাশেই অবস্থিত। বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য এটি তৈরি করছে তারা। তবে আমাদের বাঁধটি, যেটি জিরো পয়েন্ট থেকে ৩৫০ ইয়ার্ড দূরে অবস্থিত, সেটি অনেকটা নিচু। বিষয়টি উচ্চপদস্থদের নজরে আনতে হবে এবং ভারতের এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলতে হবে।”
বিএসএফ বার বার আপত্তি জানিয়েও বাংলাদেশের জিরো পয়েন্টে বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করাতে পারেনি। বিএসএফের অভিযোগ, বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী এসব আপত্তি উপেক্ষা করছে। এ নিয়ে উনকোতির জেলাশাসক দিলীপ কুমার চাকমা, অতিরিক্ত জেলাশাসক অর্ঘ্য সাহা, এবং গৌরনগর পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান সীমান্তের এই বাঁধ নির্মাণস্থল পরিদর্শন করেন।
ম্যাজিস্ট্রেট দিলীপ কুমার ত্রিপুরার দেবীপুরের ১৮৪৯ তম পিলারের অংশটি পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বাঁধ উঁচু করার কারণে কালীশহরে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হতে পারে।” তিনি দাবি করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে বাংলাদেশ সরকার বাঁধটি তৈরি করছে।
সংবাদ মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশেষজ্ঞ দাবি করছেন, বাংলাদেশের এই বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ইন্দির-মুজিব চুক্তি লঙ্ঘন হচ্ছে। যেটি ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ স্বাক্ষরিত হয়েছিল। বিশেষজ্ঞ বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি আছে, সীমান্তের জিরো পয়েন্টের ১৫০ ইয়ার্ডের মধ্যে কোনো দেশ কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করতে পারবে না।
Discussion about this post