প্রথমে ‘তালিবানি কায়দায়’ ফতোয়া জারি করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তারপর খোদ প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিলেন ‘যুদ্ধকালীন’ তৎপরতায় তৈরি থাকতে। তাহলে কী বাংলাদেশ কোনও যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে? নাকি কোনও বিদেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশকে আক্রমণ করার তাল ঠুকছে? না, এত বড় কিছু নয়। বরং “রজ্জুতে সর্পভ্রম” হচ্ছে মুহাম্মদ ইউনূসের।
ব্যাপারটা খুলেই বলা যাক। দেশ থেকে বিতাড়িত হওয়ার ৬ মাস পর বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনৈতিকভাবে তৎপর হয়েছেন। যদিও তিনি এখন ভারতে অবস্থান করছেন কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের কর্মী-সমর্থকদের প্রতি বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে দিয়েছেন। পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ওই কর্মসূচিতেই বেসামাল হয়ে পড়েছেন মুহাম্মদ ইউনুস। তাই হাসিনার ভূত তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে, ফলে তিনি এবং তাঁর উপদেষ্টামন্ডলী নানা রকম তালিবানি ফতোয়া জারি করে চলেছেন।
বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তদারকি সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আগামী ১৬ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি গোটা দেশে অবরোধের ডাক দিয়েছিল শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ। তার আগে ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে থাকছে নানান বিক্ষোভ কর্মসূচি। ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগ কর্মীদের সমর্থকরা ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে লিফলেট বিলি করছেন। আর সেই কর্মসূচি সফল হতেই চাপে পড়ে গিয়েছে প্রশাসন। বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এখন শেখ হাসিনার ভয়ে কাঁপছে। ফলে তাঁরা চাপ দিতে শুরু করে সরকারকে। ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম কার্যত একটা তালিবানি ফতোয়া জারি করে বসেন। তিনি জানান, আওয়ামী লীগের নামে যে বা যাঁরা লিফলেট বিতরণ করবেন তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। লিফলেট বিতরণ করতে দেখলেই গ্রেফতার করা হবে।
রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, আওয়ামী লীগ এখনও বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল হিসেবে সরকারিভাবে স্বীকৃত। সেরকম একটি দলকে কিভাবে বাধা দিতে পারে রাষ্ট্র? তাহলে কি শফিকুল আলম আইনের উর্ধ্বে? এই বিতর্কে রেশ কাটতে না কাটতেই মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমাদের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মতো সতর্ক থাকতে হবে’।
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের কথায়, ‘হাসিনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগে একাধিকবার আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার মুখে পড়েছে ইউনূস সরকার। এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি যে মুহাম্মদ ইউনূসকে ভালো চোখে দেখেন না, সেটা সকলেই জানেন। এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি, বিশেষ করে অবরোধ বিক্ষোভ বা হরতালের মতো ঘটনায় যদি আবারও বিশৃংখল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তাহলে বদনাম হবে বাংলাদেশের, বলা ভালো মুহাম্মদ ইউনূসের তদারকি সরকারের। সেই কারণে মুহাম্মদ ইউনুস যেকোনো মূল্যে আওয়ামী লীগের উত্থান ঠেকাতে চাইছেন।
Discussion about this post