বাংলাদেশের তদারকি সরকারের দায়িত্বে যারা আছেন, তারা কি রাজনৈতিক ভাবে কোন দায়দায়িত্ব বোঝেন? যদি বুঝতেন তাহলে সারক্ষন ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে, এই চিন্তা না করে-কিভাবে আরাকান আর্মির হাত থেকে দেশ বাঁচানো যায়, তার চিন্তা করতেন। যাদের হাতে অস্ত্র হিসাবে রয়েছে শুধু গুলিগোলা, তাদের সামলাতে পারছেনা, জিগির তুলছে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করার। এই উস্কানির পেছনে কারণটা কি? কোনো কোনো দেশ হয়তো চাইছে ভারত বাংলাদেশ যুদ্ধ হোক। তাহলে ভারতকে দোষী করা যায় এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোকে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা যাবে। কিন্তু ভারতের কোনো স্বার্থ সিদ্ধি করার জন্য, নিজের হাতে জন্ম দেওয়া বাংলাদেশের মত একটি ছোট দেশের সঙ্গে যু্দ্ধ করার প্রয়োজন আছে কী? ভারত এখন কি পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করছে? কিন্তু পাকিস্তানকে তো অনবরত যুদ্ধ করে যেতে হচ্ছে, তবে সেটা ভারতের সঙ্গে। তেমনই ভারত চাইলে বাংলাদেশকেও অনবরত যুদ্ধ করতে হবে, তবে সেটা ভারতের সঙ্গে নয়। আর পাকিস্তানের মত বাংলাদেশও টুকরো টুকরো হতে থাকবে। তবে ভারত বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটা চাইবে না।
বাংলাদেশের তদারকি সরকার চাইছে তো- যুদ্ধ হোক, তবে কার সঙ্গে সেটা পরিস্কার নয়। ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাইলে বুঝতে হবে, সেটা বাংলাদেশের মাথায় বসে থাকা কোন প্রভুর ইচ্ছা, আর সেই প্রভু পাকিস্তান নয়। ইউনূস সেনাবাহীনিকে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। অথচ সেনাবাহীনির প্রধানের সঙ্গে ইউনূসের একদমই বনিবনা নেই। কারণ সেনাপ্রধান জানেন ইউনূসকে বসানো হয়েছে আমেরিকার তরফ থেকে। আর ক্ষমতা নিয়েও দু-জনের মধ্যে দ্বন্দ চলছে। ফৌজকে হয়তো অন্য দিকে ব্যস্ত রাখা যায়, কিন্তু সেনাপ্রধানের কাছে পুরোপুরি খবর থাকে, যে দেশে কি চলছে। কোন দিক থেকে নজর ঘোরাতে চাইছে তদারকি সরকার। এখন যদি যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে আর ভোট করানোর কোন চাপ থাকবে না। এখন প্রশ্ন কার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সেনাকে প্রস্তুত থাকতে বলছেন ইউনূস। এখনও পরিস্কার নয়, কার জন্য সার্বভৌমত্ব নষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশের। আপত দৃষ্টিতে দেখলে, দেখাই যায় বাংলাদেশের বেশ কিছুটা এলাকা দখল করেছে আরাকান আর্মি। তারা এটাও বলছে এই এলাকা এখন আমাদের, এখানকার জনগনকে আমাদের কথা মতই চলতে হবে।এটা এখন আমাদের রাজত্ব।
অন্যদিকে বাংলাদেশের জনগন এই নিয়ে কোন প্রশ্নই করছে না, যে তাদের দেশের সীমান্ত এলাকা দখল হয়ে গেল, অথচ কোন কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে দেখা গেল না সেনাবাহীনির পক্ষ্য থেকে। ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাইলেই কি ভারত যুদ্ধ করবে বাংলাদেশের সঙ্গে? ভারত জানে যুদ্ধ কোন সমস্যার সমাধান নয়। কারণ ভারতকে অনেকভাবে উত্তেজিত করার চেষ্টা হয়েছে, বর্তমানেও হচ্ছে। কিন্তু ভারত জানে কিভাবে যুদ্ধ না করেও কোন একটি দেশকে ঠান্ডা করা যায়। তাছাড়া ভারতের হাতে সময় আছে, আর ভারত কোন হঠকারীদেশ নয়, তা নাহলে বাংলাদেশে যেভাবে হিন্দুদের উপর এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার চলছে, যা তাদের দেশের জনগনই নিন্দার চোখে দেখে, সেই অত্যাচারের প্রতিবাদ ভারত চাইলেই করতে পারে, তবে ভারত মনে করছে তার হাতে এখন অনেক সময় আছে।অন্যদিকে সময় আছে বাংলাদেশের হাতেও। যতদিন না ট্রাম্প শাষনভার গ্রহন করছে ততদিন ভারত শুধুই নজর রাখবে। তবে এই মহুর্তে বাংলাদেশের উচিৎ তাদের সীমান্ত রক্ষা করা, সেটা ভারতের থেকে নয়। আরাকান আর্মির হাত থেকে। তবে শোনা যাচ্ছে, ভারতের মত চীনও আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগ করছে। এখন আরাকান আর্মি বাংলাদেশের আরও ভিতরে তাদের বিস্তার ঘটায়, তা সামাল দিতে পারবে বাংলাদেশ? কারণ বাংলাদেশ এখন জিও পলিটিক্সের শিকার। বাইডেন থাকায় বাংলাদেশের জিও পলিটিক্স আর ট্রাম্প আসার ফলে জিও পলিটিক্স এক থাকবে না কখনই। শুধুমাত্র ক্ষমতা ভোগ করার জন্য একটা দেশকে দ্বিতীয় ইউক্রেন বানানোর অভিসন্ধি কি মেনে নেবে-বাংলাদেশের জনগন। কতদিন ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে বলে, নিজের দেশের দুরবস্থার থেকে চোখ ঘুরিয়ে রাখবে ইউনূস সরকার। ভারত যদি আরাকান আর্মিকে দিয়েই বাংলাদেশকে ঠান্ডা করে দেয়, সেক্ষেত্রে কেউ ভারতের দিকে আঙুল তুলতে পারবে কি? সাপও মরল লাঠিও ভাঙল না।
Discussion about this post