১৯২১ সালের ২ মে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রখ্যাত চলচিত্র পরিচালক-সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের। আজ তাঁর ১০৩ তম জন্মদিন। সত্যজিৎ রায়ের বাবা ছিলেন বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপ্রতিম কবি সুকুমার রায়। ফলে ছোটবেলা থেকেই তাঁর সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক ছিল। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং কবিগুরুর প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি পড়াশোনা শেষ করেন। সাহিত্যচর্চার সঙ্গে তাঁর ছিল চলচিত্রের প্রতি অগাধ ঝোঁক। ফলে কর্মজীবনও শুরু হয় সিনেমা দিয়েই। তিনি বিখ্যাত ফরাসি চিত্রপরিচালক জাঁ রেনোয়ার দ্যা রিভার ছবিতে সহকারি পরিচালকের কাজ করেছেন। এরপরই তিনি তৈরি করেন কিংবদন্তী সিনেমা পথের পাঁচালি। শেষ জীবনে সত্যজিৎ রায়কে চলচিত্রে তাঁর অবদানের জন্য অস্কার কমিটি লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট সম্মান প্রদান করে। পাশাপাশি তিনি ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন, চলচিত্রের সর্বোচ্চ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও দেশ বিদেশের বহু সম্মান ও পুরষ্কার তিনি পেয়েছেন তাঁর অসামান্য কৃতিত্বের জন্য।
আসুন জেনে নেওয়া যাক সত্যজিৎ রায়ের জীবনের কিছু অজানা তথ্য-
- প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিনের পর সত্যজিৎ রায়ই একমাত্র চলচিত্র জগতের মানুষ যাকে লন্ডনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সাম্মানিক ডিগ্রি দিয়েছে।
- তিনিই ভারতে প্রথম ভারতীয় পরিচালক যার ছবি পথের পাঁচালি প্রেক্ষাগৃহে রিলিজ হওয়ার আগে টিজার ক্যাম্পেইন হয়েছিল।
- তাঁর পরিচালিত বিখ্যাত সিনেমা দেবী-তে যে শ্যামা সঙ্গীত ব্যবহার করা হয়েছে সেটি সত্যজিৎ রায় নিজেই লিখেছিলেন। উল্লেখ্য ওই গানটি গেয়েছিলেন ছবি বিশ্বাস।
- ক্যালিগ্রাফিতে সত্যজিৎ রায়ের দক্ষতার কথা সকলেই জানেন। কিন্তু জানেন কি তাঁর হাতে তৈরি রোমান ফন্টের কথা? জনপ্রিয় চারটি রোমান ফন্ট ডিজাইনের পিছনে রয়েছে সত্যজিৎ রায়ের ভূমিকা আছে। ভারতীয় মোটিফ এবং ক্যালিগ্রাফি দিয়ে তৈরি সেই ফন্টগুলি হল ‘রে রোমান’, ‘রে বিজার’, ‘ড্যাফনিস’ এবং ‘হলিডে স্ক্রিপ্ট’।
- দুটি বিখ্যাত বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন সত্যজিৎ রায়। সেগুলি হল জওহরলাল নেহেরুর লেখা ‘ডিসকভারি অফ ইন্ডিয়া’ এবং জিম করবেটের লেখা ‘ম্যান ইটার অফ কুমায়ুন’।
- সত্যজিৎ রায়ের অভিযান ছবিটি দেখে ঋত্ত্বিক ঘটক অভিযোগ করেছিলেন ছবির বেশ কিছু অংশ তাঁর পরিচালিত অযান্ত্রিক ছবির নকল।
- পথের পাঁচালি সিনেমার শেষে একটু হ্যাপি এন্ডিং চেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কিন্তু অনড় ছিলেন সত্যজিৎ রায়। শেষে জওহরলাল নেহেরুর মধ্যস্থতায় সব মিটমাট হয়। সেই সিনেমাই পরবর্তীকালে কান ফিল্ম ফেস্টিভালে গিয়ে প্রশংসা পেয়েছিল।
- কাঞ্চনজঙ্ঘা সত্যজিৎ রায়ের প্রথম রঙিন সিনেমা। এই গল্পটি তাঁর নিজের লেখা।
Discussion about this post