মাছের রানি মানেই সবার আগে মনে আসে ইলিসের কথা। আসবে নাই বা কেন। ভোজনরসিক মাছে ভাতে বাঙালির পাতে ভাতের সঙ্গে মাছ থাকবে না, তা ভাবাই দায়। রুই, কাতলা, ভেটকি, পারসে পবদা, পমফ্রেট, কাচকি, মৈরলা, সরলপুঁটি আরও কত কি। মধ্যাহ্ন হোক কিংবা নৈশ্য ভোজ, প্রতিদিনই বাঙালির খাবারের মেনুতে থাকে মাছেরই পঞ্চব্যাঞ্জন। তবে হাজারও মাছের মধ্যে জলের পোকা হলেও খাবারের মেনুতে তার কিন্তু একটা আলাদা স্থান রয়েছে বরাবরই। কি বলছি, এতক্ষণে হয়তো বুঝেই গেছেন। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, চিংড়ি মাছ। কচু শাক, মালাইকারি, এঁচোর চিংড়ি, ডাব চিংড়ি, লাউ পাতায় চিংড়ি ভাপা, পটল চিংড়ি থেকে নানা রকমের ভাজা আইটেম সহ আরও কত কি। জিভে জল আনা লোভনীয় হাজারও একটা পদ রয়েছে চিংড়ি মাছের। তবে চিংড়িকে আমরা অনেকেই মাছ বলে থাকি। কিন্তু চিংড়ি যে মাছ নয়, তা মানতে নারাজ খাদ্যপ্রেমীরা। আচ্ছা রান্নার সময় অনেকেই তো আমরা চিংড়ি মাছ ভালো করে পরিষ্কার করে, তবেই পছন্দ মতো খাবার বানাই। কিন্ত আদৌ কি আমরা ভালো করে পরিষ্কার করি, প্রশ্নটা থেকেই যায়।
চিংড়িতে প্রচুর পরিমাণে আছে, ক্যালারি, ভিটামিন বি ১২, আয়োডিন, প্রোটিন, সেলেনিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, নিয়াসিন, জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়ামের মতো পুষ্টিগুন। তবে জানেন কি, তাও কিন্তু চিংড়ির মধ্যে এমন একটি জিনিস থাকে যা পরিষ্কার না করে খেলেই ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে আপনার। কর্মব্যস্ত জীবনে চটজলদি রান্না করতে আমরা অনেকেই বাজার থেকে মাছ কেটে পরিষ্কার করে আনি। তারপর সেটাকে কোনও ভাবে ধুয়েই কড়াইয়ে চাপিয়ে রান্না সেরে ফেলি। আর এতেই আনায়াসেই নিজের ক্ষতি ডেকে আনছি নিজেরাই। কিন্তু কীভাবে? আমরা হয়তো অনেকেই দেখেছি কিন্তু জানি না চিংড়ির শরীরে থাকা এই জিনিসটার প্রভাব সম্পর্কে। চিকিৎসকরা বলছেন, চিংড়ি গায়ের শক্ত খোসা ছাড়াতে গেলেই নজরে পরে পিঠ বরাবর কালো সুতোর মতোর একটা জিনিস। এই কালো সুতোর মতো শিরাতে জমে থাকে চিংড়ির শরীরের বর্জ্য পদার্থ। যা চিংড়ির শরীর থেকে ফেলা অবশ্যই প্রয়োজন। না হলে এটা সমেত রান্না করে খেলেই ক্ষণিকের মধ্যেই অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে আপনার। শুধু অ্যালার্জিই নয়, বাড়তে পারে হজমের সমস্যাও। পাশাপাশি দেখা দিতে পারে শ্বাসনালির পেশি সংকোচনে শ্বাসকষ্টের সমস্যা, রক্তনালি ফুলে যাওয়া এমনকি মস্তিষ্কে রক্তের প্রবাহের পরিমাণ কম হওয়ায় ঘটতে পারে মৃত্যুও। তবে আর কি,এবার থেকে অবশ্যই চিংড়ি খাবার আগে ভালো করে পরিষ্কার করে তবেই খান, সুস্থ থাকুন আর অন্যকেও সুস্থ রাখুন।।
Discussion about this post