বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে সে দেশে। ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে পড়ে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এরপর সরকারের দায়িত্বে আসেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস, তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিচালিত হচ্ছে। আর এরপর থেকে দেখা গিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুস তিনি ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেছে চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বের নীতি বজায় রাখার জন্য। আরে বাংলাদেশ পাকিস্তান বন্ধু প্রীতি এবং চীনের সামনে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউনূসকে পরতে হলেও ভারতের ক্ষোভের মুখে।
আর চাপে পড়তেই এবার, তিনি ভারতকে বাংলাদেশের বিশেষ প্রতিবেশী হিসেবে অভিহিত করলেন। কিন্তু কেন ইউনুসের এই সুর বদল? উঠছে প্রশ্ন।
জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি দ্য উইক-এর এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনূস নিজদেশের অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ এবং প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে সম্পর্কের প্রসঙ্গে তাঁর মতামত ব্যক্ত করেন। যেখানে তিনি ভারতকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশেষ প্রতিবেশী হিসেবেও অভিহিত করেন।
পাশাপাশি সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ ইউনুস ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক এবং সম্প্রতি, ব্যাংককে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার বৈঠক প্রসঙ্গও তিনি তুলে ধরেন তার এই সাক্ষাৎকারে। ইউনুস বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বিশ্বের মধ্যে সবথেকে সেরা সম্পর্ক হওয়া উচিত। কারণ ভারত বাংলাদেশ খুব ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী রাষ্ট্র। তার আরও দাবি, বাংলাদেশের মানচিত্র তৈরী না করে, ভারতের মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব নয়, যা আমাদের নৈকট্য এর প্রমাণ। অর্থাৎ দুই দেশের একসঙ্গে বসবাস করার ক্ষেত্রে কোন বাধা থাকাও প্রত্যাশিত নয়। “
ইউনূস উপমা টেনে বলেন , “এমন অনেক নির্মাণ রয়েছে , যার একটি অংশ ভারতে এবং অপরটি বাংলাদেশে রয়েছে। আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি এক আমরা একই ভাষায় কথা বলি। অর্থাৎ দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তীব্র হওয়ার পরও যদি দুই দেশের অভ্যন্তরীণ সম্পর্কে যদি কোন সমস্যা দেখা দেয় তবে বুঝতে হবে আসল সমস্যা অন্য কোথাও।আমাদের ভবিষ্যৎ একে অপরের সাথে বাঁধা থাকার কারণে আমি এই প্রসঙ্গগুলি তুলে ধরছি।”
যে ইউনুস এখন ভারতের উদ্দেশ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখার কথা বলছে সেই চীনের সামনে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য বা সেভেন সিস্টার্স কে নিয়ে বেশ কিছু বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। আর সেই মন্তব্য ঘের বিতর্ক সৃষ্টি হলে এই সাক্ষাৎকারে ইউনুস স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়ে জানান যে, তাঁর বক্তব্য ভুল ভাবে গ্রহন করা হয়েছে । ইউনূস বলেন, “আমি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার কথা বলছি। কিন্তু সেটাকে অনেকেই ক্ষমতা দখল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “আমি কোনও জেনারেল নই যে কাউকে দখল করব। আমি এমন একজন ব্যক্তি যে সবাইকে একত্র করার চেষ্টা করে।” ইউনূস আরও বলেন যে, তিনি সর্বদা সার্ককে শক্তিশালী করার কথা বলেন। সার্ক নিজেদের মধ্যে বিভেদ নয় নয়, সমস্যা সমাধানের জন্য প্রস্তুত।
চিন ও পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রসঙ্গে ইউনুসের সাফাই, এই সম্পর্কগুলি মূলত অর্থনৈতিক মূল্যবোধের জন্য। ইউনূসের স্পষ্ট বার্তা বাংলাদেশ কেবল চিন, পাকিস্তানের নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশীয় দেশগুলির সাথেও সম্পর্ক জোরদার করতে চায় তারা।
Discussion about this post