তীব্র গরমে নাজেহাল মানুষ। প্রচন্ড দাবদাহের জেরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যে তৈরী হয়েছে পানীয় জলের সঙ্কট। সেই আবহে কলকাতা শহরে উঠে এলো দেদার জল অপচয়ের ছবি। কলকাতা পুরসভার তরফে সরবরাহ করা পানীয় জল দিয়ে চলছে গাড়ি ধোয়া থেকে শুরু করে স্নানের কাজ।
পরিবেশবিদদের আশঙ্কা এইভাবে চলতে থাকলে শীঘ্রই জল সঙ্কটে পড়বে মহানগর।
গঙ্গার জল পরিশোধন করে পানীয় উপযোগী করে তোলে কলকাতা পুরসভা। শোধনের পরে সেই জল প্রথমে জলাধারে এবং পরে পাইপের মাধ্যমে এবং ট্যাঙ্কের সাহায্যে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। কোটি কোটি টাকা খরচ করে পানের উপযোগী করে তোলা সেই জল অপচয় হচ্ছে যথেচ্ছ হারে।
প্রচন্ড গরমে লাগামাহীনভাবে জলের অপচয়েও হুঁশ ফিরছে না পুর কর্তৃপক্ষের। রিপোর্ট অনুযায়ী কলকাতা শহরে প্রায় ৭০ কোটি লিটার জলের অপচয় হয়। পরিবেশবিদরা জানাচ্ছেন, শহরে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ জল অপচয় হয়। পুরসভা সূত্রে খবর, গঙ্গা থেকে জল তুলে তা পরিশোধন করতে লিটার প্রতি পুরসভার খরচ হয় ১ টাকার কিছু বেশি। প্রতিদিন প্রায় ৫১ কোটি ৫০ লক্ষ গ্যালন জল পরিশোধন করা হয়। ১ গ্যালন মানে প্রায় ৪ লিটার।
অর্থাৎ রোজ ২০০ কোটি লিটার জল পরিশোধন করতে ২০০ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়। কিন্তু কোটি কোটি টাকা দিয়ে পানীয় উপযোগী করে তোলা জল প্রতিদিন অপচয় হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় ধরা পড়ল জল অপচয়ের সেই দৃশ্য। কেউ পুরসভার জল দিয়ে বাসন মাজছেন, তো কেউ আবার সেই জল দিয়ে গাড়ি ধুইছেন। আবার কাউকে দেখা গেল পানীয় জল দিয়ে স্নান করতে। আবার বহু বাড়িতে দেখা গেল, ছাদের উপর জলের ট্যাঙ্ক ভরে গেলেও সুইচ বন্ধ না করার কারণে তা উপচে পড়ছে। পুরসভা সূত্রে খবর, গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেহালা, যাদবপুর, গার্ডেনরিচ, বাঁশদ্রোণীতে জলের চাহিদা অনেকটা বেড়েছে। ঘাটতি মেটাতে পুরসভার তরফে ওই সমস্ত অঞ্চলে অতিরিক্ত জলের ট্যাঙ্ক পাঠাচ্ছে। পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, গঙ্গায় এমনিতেই জলস্তর নামছে, তার উপর এইভাবে অপচয় চলতে থাকলে অচিরেই তীব্র জল সঙ্কট তৈরী হবে তিলোত্তমা শহরে। ইতিমধ্যে জল অপচয় বন্ধ করার জন্য পুরসভার তরফে মেয়র ফিরহাদ হাকিম মানুষকে সচেতন হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
Discussion about this post