সারাক্ষণ মাথার মধ্যে , কাজের চিন্তা ঘোরে ? সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে রাতে শোওয়ার আগে পর্যন্ত, সারাক্ষণ কিছু না কিছু কাজের চিন্তা ।একমনকি যখন রাতে ঘুমাচ্ছেন সেখানেও তাড়া থাকে পরেরদিন তাড়াতাড়ি উঠে কাজে বসতে হবে। সকালে অফিসে যাচ্ছেন, আবার ফিরে এসে তড়িঘড়ি বাড়ির কাজে লেগে পরছেন। এমনকি যখন একটি কাজ করছেন অন্য কাজের চিন্তা থাকছে, যার ফলে সেই কাজটিতে ১০০% মনোযোগ দিতে পারছে না। অন্যদিকে বিরতি পাচ্ছেন যখন তখন ও স্বস্তি নেই! ছুটির দিনে বন্ধুদের সাথে মন খুলে আড্ডা ও মারছেন না , সেখানে চিন্তা ঘুরছে। তাহলে কিন্তু বড়ো কোনো রোগের স্বীকার হচ্ছেন আপনি। বিশেষ করে মানসিক রোগ, অবসাদ, মানসিক চাপ, উত্তেজনার কবলে পড়তে চলছেন খুব শীঘ্রই। সারাক্ষণ কাজের চিন্তা , এটা কোনো স্বাভাবিক জীবনযাপনের লক্ষণ নয়। বলা হয়, ‘খালি মাথা শয়তানের বাস’ । তাই আমরা একটা না একটা কাজে নিজেকে সারাক্ষণ ব্যস্ত রাখতে চাই। এটা অত্যাধিক ভাবে বেড়ে গেলে অর্থাৎ এই ব্যস্ততা খুব বেশি হয়ে গেলে আপনার ব্রেন কিন্তু রেস্ট পায়না, তখনই বাড়ে বিপদ।
১.প্রতিটা কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় বাঁধুন
প্রতিদিন যখন একটি কাজ করছেন সেই সময় দ্বিতীয় কাজের চিন্তার থেকে মুক্তি পেতে, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরপরই নির্দিষ্ট ভাবে কখন কি কাজ করবেন সেটা যেমন রুটিন করবেন, সাথে সেই সব কাজের জন্য সময় ও নির্দিষ্ট করুন। চেষ্টা করবেন যতটা সম্ভব সেই সময়ের মধ্যে সেই কাজ গুলি সম্পন্ন করতে। ফলে একটি কাজ করার সময় দ্বিতীয় কাজের চিন্তা থাকবে না।
২.জীবনকে উপভোগ করতে শিখুন
যতটা সম্ভব প্রত্যেকটা কাজকেই এনজয় করুন। সে অফিসের কাজ হোক কিংবা বাড়ির কাজ , বন্ধুদের সাথে সিনেমা দেখা হোক কিংবা গুরুত্বপূর্ণ ফাইল আপডেট করা, প্রত্যেকটা কাজকে সমান গুরুত্ব সহকারে উপভোগ করুন।তাতে চাপ কম থাকবে এবং বোরিং ফিল হবেন না। যতই ব্যস্ততা থাকুক , যেটুকু সময় পাবেন চুটিয়ে মজা করুন। যতটা সম্ভব নিজেকে সময় দিন। সব সময় নিয়ম মাফিক কাজ করছেন সেটা ঠিক, তবে তার মাঝে ও নিজেকে সময় দিন, পারলে কাজের মাঝে মাঝে ব্রেক নিয়ে কিছু খান। অফিস থেকে ছুটির সময় যখন বাড়ি ফিরছেন, বাড়ির কাজের চিন্তা মাথায় রাখবেন না। দু’-তিন দিন কাজ থেকে ছুটি নিয়ে কোথাও ঘুরে আসতে পারেন। মাঝে মধ্যে অফিস থেকে বের হয়ে সিনেমা হলে গিয়ে নিজের পছন্দের সিনেমা দেখুন। তাতে নিজেকে অনেক টাই প্রাণজ্জ্বল রাখা যাবে।
৩.নিজেকে উপহার দিন
সময় পেলেই নিজের পছন্দের জিনিস কিনে নিজেকে গিফট করতে পারেন।উইক অফে নিজের পছন্দের জায়গায় ঘুরতে যেতে পারেন। মাঝে মধ্যেই দামী রেস্টুরেন্টে ফ্যামিলির সাথে দুপুরের লাঞ্চ সারতে পারেন। নিত্যদিনের মতন অফিস ছুটিতে বাস অথবা ট্রেন, মেট্রোর বদলে, ট্যাক্সি বা অ্যাপ ক্যাবের জন্য খরচ করতেই পারেন। তাহলে প্রতিদিনের একঘেয়েমি জীবন যাপনের থেকে মুক্তি পাওয়া ও যায় এবং নিত্য দিনের জীবনযাত্রার মান ও বদলে যায়।
প্রতিদিন আমরা চটজলদি জীবন যাপনের অভ্যাস করি, যাতে আমাদের কাজ খুব তাড়াতাড়ি হয়, এবং ঠিক টাইম মতন আমরা যাতে কাজ সম্পন্ন করতে পারি। কিন্তু জানেন কি? একটি গবেষণায় বলছে, তাড়াহুড়োর জীবন যাত্রার থেকে একটু ধীর গতির জীবন যাত্রা আমাদের বাঁচার ইচ্ছা তৈরি করে। ফলে আমরা একটু ছন্দ মাফিক যদি মধ্যম গতিতে জীবন যাপন করি, তাহলে সেক্ষেত্রে আমাদের আয়ু বৃদ্ধি ঘটে । অপরদিকে, বলা চলে বাঁচার ইচ্ছে শক্তি জন্মায়। তাড়াতাড়ি কাজ করলে ভুল হওয়ার ও প্রবণতা থাকে তার ফলে এক কাজ ২ বার করতে হয়।এর ফলে সময় ঘাটতি হয় বেশি। তাই নিয়ম মেনে স্বাভাবিক জীবনযাপনের অভ্যাস তৈরি করুন, এর ফলে আমাদের ব্রেনও তার নিয়মিত ছন্দে চলতে পারে, ফলে ব্রেনের ড্যামেজ হওয়া থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। এবং জটিল রজার সম্ভাবনা দূর হয়।
Discussion about this post