অ্যালোভেরা একটু অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর ভেষজ গুণ সম্পন্ন উদ্ভিদ। শরীর স্বাস্থ্য থেকে ত্বকের সুস্থতায় এর জুড়ি মেলা ভার।এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, জিংক, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ফলিক অ্যাসিড, অ্যামিনো অ্যাসিড ও ভিটামিন-এ, বি৬ ও বি২ ইত্যাদি, যা স্বাস্থ্যরক্ষার বিভিন্ন কাজে লাগে।
অ্যালোভেরা বা ঘৃতুকুমারীর উপকারিতা অনেক। ত্বক ও চুলের পরিচর্যায় আমরা সচারচার ঘৃতকুমারীকে ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু অ্যালোভেরা রস যদি প্রতিদিন সকালে উঠে খেতে পারে, তবে অনেক উপকারিতা পাবেন। জেনে নিন এর ৯টি উপকারিতা সম্পর্কে।
ওজন কমাতে কার্যকরী
দীর্ঘদিন ধরে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ওজন কমাতে চাইছেন? তবে সেক্ষেত্রে ঘৃতকুমারী খুব ভালো কার্যকরী উদ্ভিদ। অ্যালোভেরার জ্যুস ওজন কমাতে ভীষন ভাবে কাজ করে। তাছাড়া অ্যালোভেরা আমাদের শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দিয়ে আমাদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যার ফলে প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের ওজন কমতে থাকে।
ত্বক ও চুলের যত্নে
ত্বক ও চুলের যত্নে এই ভেষজের প্রয়োজনীয়তা আমাদের সকলের জানা। অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী রূপচর্চায় বহুল প্রচলিত। অ্যালোভেরা যেমন আমাদের ত্বকের ফুসকুড়ি, ত্বকে দাগ, রোদে পোড়া ত্বককে নিরাময় করে। তেমনি চুলকে আদ্র রাখতে, চুল পড়া কমাতে, চুলের ঘনত্ব বাড়াতে, চুলের পুষ্টির জোগান দিতে ভীষন ভাবে কার্যকরী। এছাড়া ক্ষত নিরাময়ে ঘৃতকুমারীর বিশেষ অবদান আছে। বাহ্যিক ক্ষতে ঘৃতকুমারীর রস দিলে ক্ষত নিরাময় হয়।
শরীরকে দূষণ মুক্ত রাখতে
অ্যালোভেরার রস আঠালো জেলির মতো। ফলে এই আঠালো রস আমাদের শরীরে প্রবেশ করে খাদ্যনালীর মাধ্যমে প্রবেশ করে। আমাদের পরিপাক তন্ত্রকে পরিষ্কার করে। নোংরা, দূষিত পদার্থ গুলিকে শুষে নিয়ে মলের মাধ্যমে বের করে দেয়। ফলে আমাদের শরীর ভিতর থেকে পরিষ্কার ও দূষণ মুক্ত থাকে।
হজমে সহায়তা
ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরার রস আমাদের হজমে সাহায্য করে। বেশিরভাগ মানুষই এখন হজমের সমস্যায় ভোগেন।এক্ষেত্রে তারা যদি সকালে উঠে এক গ্লাস করে অ্যালোভেরার রস খান তাহলে তাতে পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার থাকে এবং আমাদের হজমে সমস্যা দূর হয়। তাছাড়া অ্যালোভেরার রস কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়ারিয়াতে ভীষন ভাবে কার্যকরী।
ব্যাথা ও প্রদাহ কমাতে
অ্যালোভেরার রস বিভিন্ন ধরনের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। এতে বি-সিসটারোল সহ এমন ১২টি উপাদান আছে, যা প্রদাহ তৈরি হওয়া ঠেকায় এবং প্রদাহ হয়ে গেলে তা কমিয়ে আনে। তাছাড়া গিঁটের ব্যাথা, কোনো জায়গায় কেটে গেলে সেই ব্যাথা , জয়েন্টের ব্যাথা কমাতে সিদ্ধহস্ত অ্যালোভেরা।
অ্যালকাইনের জোগান
পুষ্টিবিদরা আমাদেরকে ৮০/২০ বা ৮০ ভাগ অ্যালক্যালাইন সমৃদ্ধ খাবার ও ২০ ভাগ অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।কারণ অ্যালকাইন সমৃদ্ধ খাবার আমাদের শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। আর এই অ্যালকাইনের জোগান দিতে পারে অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী। অ্যালোভেরাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যালকাইন থাকে। তাই এক গ্লাস অ্যালোভেরার রস আমাদের প্রয়োজনীয় অ্যালকাইনের ঘাটতি মেটায়।
ভিটামিন ও খনিজ
অ্যালোভেরাতে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন থাকে। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, জিংক, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ফলিক অ্যাসিড, অ্যামিনো অ্যাসিড ও ভিটামিন-এ, বি৬ ও বি২ ইত্যাদি।
চাপ ও রোগ প্রতিরোধক হিসাবে
অ্যালোভেরা আমাদের শারীরিক ও মানসিক চাপ কম করে। রোগ প্রতিরোধে এর বিশেষ ভূমিকা আছে। দেহের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাকে সক্রিয় করে তোলে এবং দেহের ভারসাম্য বজায় রাখে।
অ্যামাইনো বা ফ্যাটি অ্যাসিড
ঘৃতকুমারীতে মোট অ্যামাইনো অ্যাসিড আছে ১৮ থেকে ২০ ধরনের। নানা ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিডেরও দারুণ উৎস এটি।তাছাড়া আমাদের শরীরে জন্য প্রয়োজনীয় ৮ টি অ্যামাইনো অ্যাসিডের সব থেকে ভালো উৎস হল অ্যালোভেরা। তাই ঘৃতকুমারী আমাদের মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ভেষজ উদ্ভিদ।
Discussion about this post