বাংলায় তৃণমূলের থেকে ভালো ফল করবে বিজেপি। এমনকি বাংলায় বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে আসবে পদ্মশিবির। সপ্তাহ কয়েক আগে এমনই ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। কিছুদিন আগে পর্যন্ত যিনি তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য পরামর্শদাতা ছিলেন। তাঁর সংস্থা আই-প্যাক নিরলসভাবে কাজ করেছে বঙ্গে তৃণমূলকে জনসমর্থনের পাহাড়চূড়ায় বসাতে। সেই প্রশান্ত কিশোর এখন উল্টো গান গাইছেন। ঘনঘন তোপ দাগছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত কিশোরের নাম না নিয়েই তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওর নিশ্চয়ই কিছু একটা ব্যাপার আছে, তাই বিজেপিকে সমর্থন করছে। জানা যাচ্ছে, ২০২৬ সাল পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে প্রশান্ত কিশোরের আই-প্যাক সংস্থার। কিন্তু ২০২৪ লোকসভা ভোটের আগেই আচমকা কার্যত নিষ্ক্রিয় এই সংস্থা। এরপরই প্রশান্ত কিশোরের মুখে বিজেপির জয়গান। এখন প্রশ্ন উঠছে তবে কী তৃণমূলের সঙ্গ ছাড়ল আই-প্যাক?
বঙ্গ রাজনীতিতে পিকে ওরফে প্রশান্ত কিশোরের নাম বহুল চর্চিত। ২০১৯ লোকসভা ভোটে বিজেপির বিপুল সাফল্যের পর দুই বছরের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির সাজানো জমি কার্যত ধ্বংস করে একুশের বিধানসভায় তৃণমূলকে ফের সাফল্যের শীর্ষে নিয়ে আসার নেপথ্যে ছিল আই-প্যাক। এ কথা বাংলার রাজনৈতিক মহলে সকলেই একবাক্যে স্বীকার করেন। ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি বা সংক্ষেপে আইপ্যাকের পরামর্শেই তৃণমূল কংগ্রেসের সাফল্য দিন দিন পাহাড়ে চড়ছে বলেই মনে করেন তৃণমূলের একাংশ। কিন্তু কী এমন হল যে আচমকা গুরুত্ব কমল আইপ্যাকের?
তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে প্রবীন-নবীন দ্বন্দ্বের জেরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার জেরেই আপাতত হাত-পা গুটিয়ে বসে আছে আইপ্যাক। তৃণমূলের শীর্ষ মহল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না আসার অপেক্ষায় আছেন আইপ্যাকের কর্মীরা। একুশের বিধানসভা ভোটের আগে পিকে-র সংস্থা আইপ্যাককে নিয়ে এসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর আইপ্যাকের পরামর্শমতো ভোট প্রচারে সাফল্য এসেছিল তৃণমূলের। কিন্তু বর্তমানে শাসকদলের অন্দর প্রবীন-নবীন দ্বন্দ্বে জেরবার। ফলে এই মুহূর্তে শক্ত করে দলের হাত ধরেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লোকসভা ভোটের জন্য দলীয় নেতাদের কাজ ভাগ করে দিয়েছেন। ফলে আর কোনও পরামর্শদাতা সংস্থার প্রয়োজন নেই। সবমিলিয়ে বাংলার রাজনৈতিক মহল অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছে, আদৌ প্রশান্ত কিশোরের ভবিষ্যৎবাণী মিলবে নাকি তৃণমূলই ফের বাজিমাৎ করবে লোকসভা নির্বাচনে।
Discussion about this post