নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর সংসার। বাবা কাজ করেন ইঁটভাটায়, মা অন্যের বাড়িতে রান্না করেন। তারপরও লক্ষ্যভ্রষ্ট হননি। নিজের মেধা ও পরিশ্রমের জোরে হয়ে উঠলেন আইপিএস পুলিশ অফিসার। হাজার হাজার ইউপিএসসি পরিক্ষায় প্রস্তুতি নেওয়া ছাত্রছাত্রীদের কাছে অনুপ্রেরণা তিনি।
সাফিন হাসান। ১৯৯৫ সালে গুজরাটের কানোদর গ্রামে জন্ম হয় তাঁর। ছোট থেকেই অভাব অনটনের মধ্যে বড় হন সাফিন। সাফিনের বাবা আগে ডায়মন্ড ইউনিটে কাজ করতেন। হঠাৎই কাজটা চলে যায় তাঁর। তারপরই ইঁটভাটায় কাজ করতে শুরু করেন। আর সাফিনের মা অন্যের বাড়িতে রান্না করতেন। এভাবেই কষ্টে সংসার চলত সাফিনদের। তবে ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্র সাফিন হাসান। যখন তিনি ইলেভেনে, তাঁদের আর্থিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। স্কুলের শিক্ষকরা অবশ্য সাহায্য করতেন এই মেধাবী ছাত্রকে। স্কুলের সমস্ত ফি মুকুব করে দিয়েছিলেন। ইলেভেন-টুয়েলভের পর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন তিনি। সেই সময়ও কলেজের ফি দিতে হিমশিম খেতে হয় তাঁকে। কিন্তু আত্মীয়দের সহযোগিতায় কলেজে পড়েন সাফিন। কলেজ পাশ করার পরই ইউপিএসসি পরিক্ষায় বসার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। এই পরিক্ষায় বসার অনুপ্রেরণা অবশ্য স্কুলে পড়ার সময়ই তৈরি হয় সাফিনের। স্কুলে পড়ার সময় একবার জেলাশাসক আসেন সাফিনের স্কুলে। তাঁর থেকেই অনুপ্রেরণা জোগায়।
২০১৭ সালে প্রথমবার ইউপিএসসি পরিক্ষায় বসেন। কিন্তু পরিক্ষা দিতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় তাঁকে। কিন্তু দমে যাননি তিনি। ওই আহত অবস্থায় পরিক্ষায় বসেন। পরিক্ষা দেওয়ার পরই হাসপাতালে ভর্তি হন সাফিন। এমনকি অস্ত্রোপচারও হয় তাঁর। কিছুদিন ফিজিওথেরাপিও চলে তাঁরা। ২০১৮ সালে আবারও তিনি পরিক্ষায় বসেন। দেশের মধ্যে ৫৭০ রেঙ্ক করেন। শুধুমাত্র ইউপিএসসি নয়, গুজরাটের পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরিক্ষাতেও একইভাবে সাফল্য পান তিনি। ২০১৯ সালে প্রথম চাকরি পান। বর্তমানে তিনি গুজরাটের আহেমদাবাদে একজন ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের পদে কর্মরত। আজ সাফিন হাজার হাজার ইউপিএসসি পরিক্ষায় বসা পড়ুয়াদের আইকন হয়ে উঠেছে।
Discussion about this post