হার্দিক পান্ডিয়া হয়তো বুঝতেই পারছেন না তার দোষটা ঠিক কি। তাকে ক্যাপ্টেন করেছে ম্যানেজমেন্ট। হ্যাঁ এটা ঠিক যে মাঠে তিনি হয়তো প্রথমে কোথাও কোথাও রোহিতের সঙ্গে মার্জিত ব্যবহার করেন নি, অথবা তিনি নিজেকে ক্যাপ্টেন হিসাবে জাহির করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন। কিন্তু মুম্বইয়ের সমর্থকরা তো বহু আগের থেকেই রোহিত ছাড়া পান্ডিয়াকে ক্যাপ্টেন হিসাবে মানতেই চায়নি, তাই তো মুম্বয়ের ক্যাপ্টেন পরিবর্তনের পর থেকে ক্রমাগত কমতে থেকেছে ফলোয়ারের সংখ্যা। নিজের মাঠে ক্যাপ্টেনকে যদি সমর্থকদের টোনটিং শুনতে হয় তা হলে যে কোন দলের ক্যাপ্টেনকের মাথা ঠিকঠাক কাজ করে না, যা হয়েছে মুম্বয়ের হার্দিকের ক্ষেত্রে।
চেন্নাই সুপার কিংসের ইনিংস সবে মাত্র শেষ হয়েছে। সম্প্রচারকারী সংস্থা মাঠ থেকে ক্যামেরা ঘুরিয়েছে স্টুডিয়োতে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির তিন বলে তিন ছক্কার প্রশংসা করছিলেন সঞ্চালক মায়ান্তি ল্যাঙ্গার। কিন্তু তাঁকে প্রায় থামিয়ে দিয়ে হার্দিক পাণ্ড্যের উপর ক্ষোভ উগরে দিলেন ভারতের অন্যতম সর্বকালের সেরা ব্যটার সুনীল গাওস্কর। তাকে কিছুটা সমর্থন করলেন পিটারসেনও।
খেলা হচ্ছিল ওয়াংখেড়েতে। কিন্তু চিৎকার শুনে মনে হয়েছে ম্যাচ হচ্ছে চিপকে। পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। পাঁচ বার আইপিএল জিতেছে চেন্নাই সুপার কিংসও। এবারের আইপিএলে অন্যতম সেরা দুই দলের লড়াইয়ে প্রথমে ব্যাট করে চেন্নাই তুলল ২০৬ রান। শেষ ওভারে বল করতে এসে হার্দিক দিয়ে ফেললেন ২৬ রান। যা মানতে না পেরে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুম্বইবাসী গাওস্কর। তিনি বলেন, “ভয়াবহ বোলিং। ভয়াবহ নেতৃত্ব। হাতে একাধিক বোলার থাকতেও নিজে বল করতে এল। ধোনি অপেক্ষা করছিল ওর পায়ের কাছে বল আসার। সেটাই করল হার্দিক। ছক্কা মারতে দিল। খুব সাধারণ মানের বোলিং এটা। ততটাই সাধারণ নেতৃত্ব।”
তিনি যে কতটা বিরক্ত সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। তিনি বলতেই থাকেন, “শ্রেয়স গোপাল মাত্র এক ওভার বল করল। কেন? ও তো বোলার। তাকে দিয়ে আমি মাত্র এক ওভার করাব? এটা নেতৃত্ব! আগের ম্যাচে যে (যশপ্রীত) বুমরা এত ভাল বল করল, তাকে নতুন বলটাই দিল না। এটাকে নেতৃত্ব বলে না।”
গাওস্কর একটু থামতেই পিটারসেন বলতে শুরু করলেন। যদিও তিনি গাওস্কারের মত একতরফা হার্দিককে দোষ দেননি, পিটারসেন বলেন “কিচ্ছু ঠিক নেই। হার্দিককে টসের সময় দেখছিলাম খুব হাসছে। কিন্তু ও ঠিক নেই। আমি বলছি ও ঠিক নেই। এটা মুম্বইয়ের ঘরের মাঠ। সেখানে ওকে টিটকিরি দেওয়া হচ্ছে। এখানে গোটা মাঠ চেন্নাইয়ের জন্য চিৎকার করছে। এটা মেনে নেওয়া কঠিন। ও তো মানুষ। ওর আবেগ আছে। আমি জানি এমন পরিস্থিতিতে কেমন লাগে। আমরা সবাই জানি এটা মেনে নেওয়া কঠিন। সেটার প্রভাব পড়ছে হার্দিকের উপর।”
ধোনির সঙ্গে হার্দিকের তুলনা করেন পিটারসেন। তিনি বলেন, “একটা দলের অধিনায়ক পাঁচ বছর আগে থেকে পরিকল্পনা করছে পরবর্তী অধিনায়ক কে হবে। আর এ দিকে হার্দিকের কাছে এই ম্যাচের জন্য দ্বিতীয় কোনও পরিকল্পনা নেই। ও বুঝতেই পারছে না কী করবে।”
গাওস্কর এবং পিটারসেন যে ভাবে হার্দিকের সমালোচনা করছিলেন, তাতে কিছুটা রাশ টানেন মায়ান্তি। তিনি বলেন, “ম্যাচ এখনও বাকি আছে। রান তাড়া করা বাকি আছে।” কিছুটা ঠান্ডা হন গাওস্কর এবং পিটারসেন। তাঁরা সায় দেন। তার পরেও পিটারসেন বলেন, “অবশ্যই ম্যাচ এখনও বাকি আছে। তবে ২০০ রান হওয়া উচিত হয়নি।” আর গাওস্কর এবং পিটারসেন যে ঠিক ছিলেন তা তো প্রমান হয়ে গেছে ম্যাচের শেষে।
Discussion about this post