নিজস্ব প্রতিনিধি: তিনি চার বারের সাংসদ। ১৯৭৭ সালে প্রথম বার ব্যারাকপুর থেকে কংগ্রেসের টিকিটে সাংসদ হয়েছিলেন। তার পর তিনবারই দমদম আসন থেকে তৃণমূলের হয়ে জয়ী হয়েছেন। ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে। বর্ষীয়াণ নেতা সৌগত রায় তৃণমূল কংগ্রেসের পুরনো দিনের সঙ্গী। আসন্ন লোকসভা ভোটে জোড়াফুল শিবির আবার তাঁকে দমদম কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য টিকিট দিয়েছে।
দলের তরফে গত ১০ মার্চ ব্রিগেডের জনগর্জন সভার মঞ্চ থেকে প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার পর জোরকদমে প্রচারে নেমেছেন সৌগত রায়। কখনও পুজো উপলক্ষে পান্তা খাওয়ার অনুষ্ঠানে কখনও আবার ভিন্ন ভূমিকায় তাঁকে জনসংযোগ সারতে দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা জানেন, দমদমের বিদায়ী সাংসদ জনসংযোগে কখনও ঘাটতি রাখেননি। যে কোনও অনুষ্ঠান বা পুজোতে আমন্ত্রণ করা হলে তিনি উপস্থিত থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু মানুষের জন্য রাজনীতিতে জনসংযোগ তো আর প্রধান বিষয় নয়। মানুষ ভোট দেন উন্নয়নের আশায়। দমদম থেকে তিন বারের সাংসদ হওয়ার পরেও তিনি নিজের লোকসভা এলাকায় কতটা কাজ করেছেন তা নিয়ে ইতিমধ্যে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, উন্নয়নে ডাহা ফেল করেছেন সৌগত রায়। মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি থেকে পরিকাঠামো উন্নয়ন— কিছুতেই দিশা দেখাতে পারেননি তিনি।
পানিহাটি বিধানসভা এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকাকালীন সৌগত রায় ২০০ কোটির বেশি টাকার জল প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন। কিন্তু সেই জল প্রকল্প থেকে আজও পর্যাপ্ত জল মেলে না। দমদমের সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, পরিসংখ্যান অনুযায়ী সৌগত রায় লোকসভায় সব চেয়ে বেশি বক্তব্য রেখেছেন। সব চেয়ে বেশি প্রশ্ন করেছেন। কিন্তু এত বছরে দমদম লোকসভা কেন্দ্রে কোনও কেন্দ্রীয় প্রকল্প আনতে পারেননি। পাশাপাশি দমদম লোকসভার বাম প্রার্থী তথা সৌগত রায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী সুজন চক্রবর্তী বলেন, আমি এক বার সাংসদ হয়ে রাজ্যে অনেকগুলি জাতীয় গবেষণা কেন্দ্রের অনুমোদন করিয়েছিলাম। কিন্তু সৌগতবাবু ক’টা করেছেন, তা জানা নেই। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, উনি যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চেয়েছেন, তার কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি।
যদিও সাংসদ হিসেবে নিজের কৃতকর্ম সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ৭৭ বছর বয়সি এই নেতা। দল তাঁকে এই নির্বাচনে টিকিট দেবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন তিনি নিজে। এমনকি টিকিট দিলেও নিজে জিততে পারবেন কি না তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে তাঁর। সংবাদমাধ্যমের সামনে সৌগত রায় বলেছিলেন, ‘জানি না দল কাকে মনোনয়ন দেবে, যদি আমায় দেয়, আমি জিততে পারব কি না জানি না।‘ আসন্ন ভোটে তাঁর ভাগ্যে কী রয়েছে তা জানা যাবে আগামী ৪ জুন।
Discussion about this post