বৃষ্টি কমার নাম নেই। রবিবার উত্তর সিকিমে নামতেই পারল না কপ্টার। খারাপ আবহাওয়ার কারণে এদিন কপ্টার উড়তে পারেনি। সোমবার আবহাওয়ার উন্নতি হলে টুং থেকে মঙ্গন পর্যন্ত পর্যটকদের হাঁটা পথে নিচে নামিয়ে আনা হবে। তবে এদিন সকাল থেকে পরিস্থিতির এতটুকু উন্নতি হয়নি। সেক্ষেত্রে মঙ্গলবার থেকেই পুরোদমে উদ্ধারকাজ শুরু হতে পারে। সিকিম প্রশাসন সূত্রের খবর, গ্যাংটকে রাখা হয়েছে দুটি হেলিকপ্টার। প্রয়োজনে বাগডোগরা থেকেও সেনাবাহিনীর কপ্টার আনার পরিকল্পনা রয়েছে। টুং থেকে মঙ্গন পর্যন্ত পর্যটকদের প্রায় পাঁচ কিমি রাস্তা হাঁটা পথে নিচে নামিয়ে আনা হবে। তারপর ধস পেরিয়ে সেখান থেকে সড়ক পথে গ্যাংটকে আনার চেষ্টা চলবে। তবে আবহাওয়ার উন্নতির উপরই সমস্ত পরিকল্পনাই নির্ভর করছে। প্রসঙ্গত, লাগাতার বৃষ্টিতে ধসের জেরে বিপর্যস্ত উত্তর সিকিম।
পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, পর্যটনের জন্য বিখ্যাত লাচুংয়ের সঙ্গে গোটা রাজ্যেরই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বিপর্যয়ের জেরে সিকিমে এখনও একাধিক পর্যটক আটকে রয়েছেন। ভারতীয়দের পাশাপাশি রয়েছেন বিদেশি পর্যটকও। তাঁদের কী ভাবে দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব, আপাতত তাই নিয়ে চিন্তিত প্রশাসন। ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিচ্ছে উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে প্রশাসন। একদিকে পাহাড়ের পাশাপাশি সমতলে ও বাড়ছে বৃষ্টির পরিমাণ। শুক্রবার বিকেলের পর থেকে সিকিমের পাহাড়ে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কম হলেও সমতলের ক্রমশ বৃষ্টি পরিমান বাড়ছে। তিস্তা নদীর জল কিছুটা কমলেও চিন্তা কমেনি প্রশাসনের। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে যেমনটা জানা যাচ্ছে সিকিম এবং বাংলার পার্বত্য এলাকায় বাড়ি থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কালিম্পং প্রশাসন ইতিমধ্যেই নিচু এলাকার মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেছে। যাতে তিস্তার জল বাড়লেও, ক্ষয়ক্ষতি কম হয় সেদিকে নজর দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ে বৃষ্টির কারণে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ভারী যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি তিস্তা বাজার হয়ে দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তা বন্ধ রয়েছে।
জানানো হয়েছে, ছোট গাড়ি আপাতত মানসং-১৭ মাইল-আলগাড়া-লাভা-গরুবাথান হয়ে শিলিগুড়ি যাতায়াত করতে পারবে। তুলনামূলক বড় এবং ভারী গাড়িগুলি পেডং-আলগাড়া-লাভা-গরুবাথান হয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছতে পারবে। পাশাপাশি কালিম্পং থেকে দার্জিলিং যাওয়ার জন্য ২৭ মাইল থেকে তিস্তা ভ্যালি হয়ে পৌঁছনো যাবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। উল্লেখ্য, গত তিন চারদিন ধরে লাগাতার বর্ষণ চলছে সিকিমে। প্রবল বর্ষণে সিকিমের একাধিক জায়গায় ধস নামে। গত সোমবার সিকিমে ধসের কারণে প্রাণ হারায় তিন বাসিন্দা। এখনও উত্তর সিকিমে একাধিক জায়গা ধসে বিধ্বস্ত। একেবারেই লণ্ডভণ্ড পরিস্থিতি। জায়গায় জায়গায় আটকে আছেন পর্যটকরা। মোবাইল নেটওয়ার্ক বসে যাওয়ায় তাঁদের সঙ্গে পরিজনদের যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন। খারাপ আবহাওয়ায় উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। প্রবল বৃষ্টিতে ফুঁসছে তিস্তা। তিস্তার জল বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় কালিম্পং জেলার তিস্তা বাজার এলাকায়।
Discussion about this post