২৪-এর লোকসভা ভোটের সঙ্গেই বাংলার পড়শি রাজ্যে চলছে বিধানসভা নির্বাচন। সব বুথ ফেরত সমীক্ষাকে ভুল প্রমানিত করে বঙ্গে যখন ধরাশায়ী বিজেপি, সেখানে ওড়িশায় মিলে গেল বুধ ফেরত সমীক্ষার ভবিষ্যতবাণী। মঙ্গলবার ভোট গণনা শুরু হতেই বোঝা গিয়েছিল ওড়িশায় এবার ভাঙতে চলেছে ২৪ বছরের বিজেডি সরকার। তেমনই লোকসভা আসনেও ভরাডুবি হতে চলেছে নবীন পট্টনায়কের দলের। বিকেল চারটে পর্যন্ত ট্রেন্ড অনুযায়ী ওড়িশা বিধানসভার ১৪৭ আসনের মধ্যে বিজেপি এগিয়ে ৮০টি আসনে, একটিতে জয়ী ঘোষণা হয়েছে ইতিমধ্যেই। অন্যদিকে নবীন পট্টনায়কের বিজু জনতা দল এগিয়ে ৪৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে। কংগ্রেসও এবার ভালো ফল করেছে ওড়িশায়। বিকেল চারটে পর্যন্ত কংগ্রেস ১৪টি আসনে এগিয়ে, আর একটি আসনে কংগ্রেস প্রার্থী জয়ী ঘোষিত হয়েছেন। অপরদিকে সিপিএম এগিয়ে একটি আসনে এবং দুটি আসনে এগিয়ে নির্দল প্রার্থীরা।
ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী দাঁড়িয়েছিলেন দুটি বিধানসভা আসনে। প্রথমটি হল হিজলি বিধানসভা কেন্দ্র এবং দ্বিতীয়টি হল কাঁটাবাঞ্জি বিধানসভা কেন্দ্র। হিজলি তাঁর বরাবরেই আসন। বিকেল চারটে পর্যন্ত এই আসনে ওড়িশার বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক মাত্র ৩ হাজার ভোটে এগিয়ে। তাঁকে কড়া টক্কর দিচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী শিশির কুমার মিশ্র। অপরদিকে কাঁটাবাঞ্জি বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থী লক্ষণ বাগের কাছে ২২৭৫ ভোটে হারছেন নবীন পট্টনায়ক। ফলে ধরে নেওয়া হচ্ছে, ২০০০ সাল থেকে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী থাকা নবীনের সাম্রাজ্য এবার যেতে বসেছে। অপরদিকে লোকসভা ভোটেও ওড়িশায় ভরাডুবি হয়েছে বিজু জনতা দলের। বিকেল চারটে পর্যন্ত ওড়িশা লোকসভার ২১টি আসনের মধ্যে ১৯টিতেই এগিয়ে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা। একটি করে আসনে এগিয়ে বিজেডি এবং নির্দল প্রার্থীরা। রাজনৈতিক মহলের মতে, কেন্দ্রে কার্যত ভরাডুবি হওয়ার হাত থেকে বিজেপিকে বাঁচিয়ে দিল ওড়িশার ফল।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে ওড়িশায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন এবার ওড়িশায় বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেবেন। তিনি শপথের তারিখও ঠিক করে দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ৪ জুন ভোটের ফল ঘোষণা হবে এবং আগামী ১০ জুন ওড়িশায় নতুন মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেবেন। তিনি বিজেপির কেউ একজন হবেন বলেও দাবি করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। আশ্চর্যজনকভাবে সেটাই হতে চলেছে। উল্লেখ্য, নবীন পট্টনায়ক দীর্ঘদিন বিজেপির এনডিএ ডোটের অন্যতম শরিক ছিল। কিন্তু বছর কয়েক আগে নবীন এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে আসেন। এবারের লোকসভায় বিজেডি একা লড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, কোনও বিল বা আইন পাশের জন্য জোটে না থেকেও বিজু জনতা দল বিজেপিকে সমর্থন দিয়েছে। তবে এবার সেই সম্পর্কে ছেদ পড়তে চলেছে। ওড়িশা থেকে মুছে যেতে বসেছে বিজু জনতা দলের দীর্ঘ আধিপত্য। সেখানে এথন উড়বে গেরুয়া পতাকা।
Discussion about this post