কার্যত ফিনিক্স পাখির মতো ফিরে আসছে রাষ্ট্রায়ত্ব মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা বিএসএনএল। মোবাইল সংযোগ দেওয়ার দৌঁড়ে জিও, এয়ারটেল, ভোডাফোন-আইডিয়াকে রীতিমতো কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে বিএসএনএল। এবার তাঁদের নজর ব্রডব্যান্ড পরিষেবার দিকে। অর্থাৎ অপটিক্যাল ফাইবার ভিত্তিক পরিষেবার দিকে জোর দিতে চাইছে বিএসএনএল। কিরকম হবে বিএসএনএলের এই ব্রডব্যান্ড পরিষেবা।
রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা সূত্রে জানা যাচ্ছে, দেশের যে কোনও প্রান্তে গ্রাহকরা নিজেদের মোডেম এবং সংযোগ ব্যবহার করে ইন্টারনেট পরিষেবা যাতে পেতে পারেন, সেরকমই সুবিধা আনা হচ্ছে। সোজা কথায় বলতে গেলে মোবাইলে যে ধরণের রোমিং পরিষেবা মেলে, সেই ধরণের ওয়াইফাই রোমিং ইন্টারনেট পাওয়া যাবে মোডেম ব্যবহার করে। সম্প্রতি ভারতের টেলিকমমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া জানিয়েছেন, অক্টোবরে কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় এই পরিষেবা চালু হয়েছে পরীক্ষামূলকভাবে। নভেম্বর এবং ডিসেম্বরের মধ্যেই কলকাতা-সহ দেশের বেশ কয়েকটি সার্কেলে এই পরিষেবা চালু হয়ে যাবে।
ব্যাপারটা ঠিক কী?
বিএসএনএল যে ওয়াইফাই রোমিং পরিষেবা দিতে চাইছে, তা দেশের ইন্টারনেট জগতে বিপ্লব এনে দেবে। কারণ, এই পরিষেবার অধীনে বিএসএনএল গ্রাহকরা অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড সংযোগ বাড়িতে লাগানো মোডেমের মাধ্যমে দেশের যে কোনও প্রান্তে বসে ইন্টারনেট উপভোগ করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি আপনার বাড়িতে লাগানো বিএসএনএল ব্রডব্যান্ড মোডেমে ওয়াইফাই রোমিংয়ের ছাড়পত্র দিলেন, আর আপনি দিল্লি, কাশ্মীর বা আন্দামানে বসেই সেই পরিষেবা নিজের মোবাইলে পেয়ে যাবেন। রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থাটির দাবি, বিএসএনএল-ই প্রথম সংস্থা, যারা দেশে এই সুযোগ দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই পরিষেবা চালুর প্রথম ১৫ দিনে দেশে প্রায় ৭৪,০০০ এবং কলকাতা সার্কলকে প্রায় ৮০০ গ্রাহক এ জন্য আবেদন করেছেন। সংস্থার আরও দাবি, এই ব্যবস্থায় আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে।
ইতিমধ্যেই কলকাতা সার্কেলে আংশিকভাবে এই অত্যাধুনিক পরিষেবা চালু হয়েছে। তাতেই ৮০০ জনের বেশি গ্রাহক এই পরিষেবা গ্রহনের আবেদন করেছেন। সংস্থার আশা, আগামীদিনে আরও গ্রাহক এই পরিষেবা নিতে আবেদন করবেন। কারণ, এই অভিনব ইন্টারনেট পরিষেবা অন্যান্য বেসরকারি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা দিতে পারবে না। ব্রডব্যান্ডের বাজার দখল করতে এই এক চালেই বাজিমাত করতে পারে বিএসএনএল। এমনটাই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। কারণ, অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে বাড়িতে লাগানো মোডেমের সাহায্যে ঘরে বসে মোবাইল ও স্মার্ট টিভিতে যেমন ইন্টারনেট পরিষেবা উপভোগ করা যাবে, তেমনই ওয়াইফাই রোমিংয়ের সাহায্যে দূরবর্তী স্থানে বসেও একই পরিষেবা উপভোগ করা যাবে। যা একটা বৈপ্লবিক পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
Discussion about this post