মাত্র ৬১ বছর বয়সে চলে গেলেন বসিরহাটের সাংসদ হাজি নূরুল ইসলাম। রাজ্য রাজনীতিতে পরিচিত নাম হাজি নূরুল ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সবচেয়ে নজরকাড়া কেন্দ্র বসিরহাট থেকে জিতেছিলেন। সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হওয়ার আগে থেকেই রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতি উত্তাল হয়েছিল সন্দেশখালি ইস্যুতে। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই সন্দেশখালির দিকেই নজর ছিল গোটা দেশের। যা নিয়ে যথেষ্ট চাপে পড়েছিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। আর এই সন্দেশখালি এলাকা বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত হওয়ায় এই কেন্দ্র নিয়ে বিজেপি যথেষ্ট উৎসাহিত হয়েছিল। সেই উত্তাল সময়েই তৃণমূল নেত্রী বসিরহাটে টিকিট দিয়েছিলেন দলের পুরোনো সৈনিক হাজি নূরল ইসলামকে। বুধবার দুপুরে আচমকাই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন এই পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ তথা তৃণমল সাংসদ।
দীর্ঘদিন ধরেই লিভার ক্যানসারে ভুগছিলেন হাজি নূরুল ইসলাম। তাঁর চিকিৎসাও চলছিল। বুধবার সকাল থেকেই তাঁর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। যদিও তিনি বাড়িতেই ছিলেন। বেলার দিকে তৃণমূল সাংসদ সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে চিকিৎসকদের বাড়িতে ডাকা হয়। তাঁরাই সাংসদকে মৃত ঘোষণা করেন। হাজি নূরুলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলার রাজনীতিবিদরা। নূরুলের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমাদের সহকর্মী তথা বসিরহাটের সাংসদ হাজি নুরুল ইসলামকে হারিয়ে আমরা শোকাহত। সুন্দরবনের মতো প্রান্তিক এলাকায় তিনি ছিলেন প্রকৃতই সমাজকর্মী’’। অপরদিকে নুরুলের পরিবারকে শোকবার্তা জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি লেখেন, মা মাটি মানুষের সরকারে হাজি নুরুল সত্যিই চ্যাম্পিয়ন। সাধারণ মানুষের জন্য তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ।
হাজি নূরুল ইসলাম প্রথমবার সাংসদ হয়েছিলেন ২০০৯ সালে এই বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র থেকেই। কিন্তু ২০১৪ সালে তাঁকে আর টিকিট দেয়নি তৃণমূল। ২০১৪ সালেই তাঁকে জঙ্গীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি হেরে যান। এরপর ২০১৬ বিধানসভা ভোটে তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয় উত্তর ২৪ পরগণার হাড়ায়া কেন্দ্রে। এখান থেকে জিতে বিধায়ক হন হাজি নূরুল। ২০২১ সালেও তিনি হাড়োয়া থেকে জিতেই বিধায়ক ছিলেন। কিন্তু ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে বসিরহাটের মতো কঠিন আসনে তাঁর উপরই ভরসা করেন তৃণমূল নেত্রী। যাবতীয় বিরোধী হাওয়া রুখে দিয়ে বিজেপির প্রার্থী রেখা পাত্রকে বিপুল ভোটে হারিয়ে তিনি দলনেত্রীর মর্যাদা রেখেছিলেন। কিন্তু এবার ভোটে জেতার কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁর মৃত্যুতে বসিরহাট আসনটি ফাঁকা হয়ে গেল।
Discussion about this post