দুর্গাপুজোর আগেই নতুন করে অশান্তি বাংলাদেশে। যদিও শেখ হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশে দফায় দফায় আক্রান্ত হয়েছে সে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা। তবে হিন্দু বাঙালিদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজোর আগে নতুন করে আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই দুর্গাপুজোর আয়োজন করা নিয়ে বাংলাদেশের একাধিক কট্টরপন্থী মৌলবাদী সংগঠন হুমকি বা একাধিক ফতোয়া জারি করেছে। জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশে এবার একাধিক সর্বজনীন পুজো কমিটি হয়তো পুজো করছে না। না হলে নমো নমো করে পুজো সারতে চলেছে। এই আবহেই এবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন তদারকি সরকারকে নরমে গরমে বার্তা দিল নতুন দিল্লি।
শুক্রবারই ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণবীর জয়সওয়াল এক সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা বার বার বার্তা দিয়েছি। আমাদের প্রত্যাশা এই যে, সব পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। দুর্গাপুজোর সময় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা ভালো হবে না। পুজো সকলের জন্য শুভ হোক। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের দুর্গাপুজো মণ্ডপে অনাকাঙ্খিত হামলা যে সামাজিক সম্প্রীতির বিষয়ে সঠিক বার্তা দেয় না সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণবীর জয়সওয়াল সার্ক নিয়ে নতুন করে বিতর্ক এবং বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে নতুন সম্পর্ক নিয়েও সাবধানী বার্তা দিয়েছেন। তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, সার্কের বিষয়ে, আমরা আঞ্চলিক সহযোগিতা চাই তবে আপনারা জানেন এর অধীনে আঞ্চলিক সহযোগিতার কেন অগ্রগতি হয়নি। কারণ একটি দেশের কাজের বিশেষ পদ্ধতির কারণে সার্ক আটকে যাচ্ছে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে ভারত সরকারের বার্তায় সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় দুর্গাপুজো নিয়ে নতুন করে অশান্তির আবহ। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের বক্তব্যে অনেকটাই মৃদু হুমকির সুর শোনা গিয়েছে এই নিয়ে। যদিও এত কিছুর পরও বাংলাদেশে এবার দুর্গাপুজোর আনন্দ ফিকে হতে চলেছে বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
কারণ, বারবার হামলা ও হুমকির জেরে অধিকাংশ পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা এবার উৎসহ উদযাপনে কাটছাঁট করছে। অনেক জায়গাতেই পুজোর কয়েকটা দিন যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা যাত্রাপালার আয়োজন হতো সেটা এবার হচ্ছে না। ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন এবার কুমারী পুজো বাতিল করেছে। একটা আতঙ্কের পরিবেশের মধ্যেই অধিকাংশ পুজো কমিটি পুজোর তোড়জোড় করছে। যদিও ইউনূস সরকারের তরফে দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তবুও হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় সে ভাবে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কোনও উদ্যোগও দেখা যায়নি বলেই দাবি বাংলাদেশের হিন্দু সংগঠনগুলির। এই আবহেই ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের বার্তা যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
Discussion about this post