সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তারদের মত বিরোধ হয় আরজি কর হাসপাতাল থেকে ৫১ জনের সাসপেনশনকে কেন্দ্র করে। মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য ‘সরকারকে না জানিয়ে’ এভাবে কাউকে সাসপেন্ড করে দেওয়া যায় না এবং এটিও এক প্রকার ‘থ্রেট কালচার’। জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য ছিল ওই ৫১ জনের সাসপেনশনের বিষয়ে নির্দিষ্ট কমিটি তদন্ত করে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই মর্মে ডক্টর অনিকেত মাহাতো প্রশ্ন তুলেছিলেন, “ম্যাডাম, আমরা কি ধর্ষকদের পক্ষে দাঁড়াবো?” জুনিয়ার ডাক্তার এবং মুখ্যমন্ত্রীর এই বিতর্ক গোটা রাত চলেছে সামাজিক মাধ্যমেও। যদিও মঙ্গলবার সাসপেনশন বিষয়ক হাইকোর্টের নির্দেশ গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষেই। হাইকোর্টের স্থগিত হয়েছে ৫১ জনের সাসপেনশন। উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ‘এর সিদ্ধান্ত সরকারই নেবে’। মঙ্গলবার হাইকোর্টে বিচারপতি কৌশিক চন্দের অবকাশকালীন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, এই সাসপেনশন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য। তারা সিদ্ধান্ত না-নেওয়া পর্যন্ত গত ৫ অক্টোবর ৫১ জনকে সাসপেন্ড করে যে রেজোলিউশন নেওয়া হয়েছিল, তা কার্যকরী হবে না। এদিকে আরজি করের আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ কাউকে সাসপেন্ড করেননি। রেজোলিউশন রাজ্যের কাছে পাঠানো হবে। তার পরেই বিচারপতি চন্দ জানান, এই সাসপেনশন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তিলোত্তমার ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার আবহে পড়ুয়ারা হাসপাতালের ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে সরব হয়ে আন্দোলনে নামেন। গত সেপ্টেম্বর মাসে আরজি কর হাসপাতালের কলেজ কাউন্সিল ৫১ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই ৫১ জনের বিরুদ্ধে হাসপাতালে থ্রেট কালচার চালানো, আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করার মতো অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়ে জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ। সেই সঙ্গে কয়েক জনের নামের তালিকাও দেওয়া হয়। এরপরেই সেই তালিকায় থাকা অভিযুক্তদের তলব করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর তাঁদের কলেজ থেকে সাসপেন্ড করা হয়। সাসপেনশনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ওই ৫১ জনই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। অপর দিকে, হস্টেলে ঢুকতে বারণ করায় গত ১৮ই অক্টোবর হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ৩১ জন জুনিয়র ডাক্তার। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের সাসপেন্ড করায় পুলিশ তাঁদের হস্টেলে ঢুকতে দিচ্ছে না। সেই মামলা দায়ের করার অনুমতি দেওয়া হয়। সবই মামলার রেশ ধরেই এবার হাইকোর্ট জানালেন এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য।
Discussion about this post