১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের কথা আজ প্রায় অস্বীকার করছে বাংলাদেশ। কিন্তু দেশকে স্বাধীন করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান দীর্ঘ ৯ মাস লড়াই করে, রক্তক্ষয় করে সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে লড়াই ছিনিয়ে এনেছিল। মুক্তিযুদ্ধের পার হয়ে গেল আরও একটি বছর। স্বাধীন হয়েছিল বাংলাদেশ। তবে এই স্বাধীনতা হঠাৎ করে আসেনি। এর পিছনে রয়েছে বহু ইতিহাস।
ইতিহাসে এখনও স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে বাঙালি জাতির নিপীড়ণ, অত্যাচারের কথা। পরাধীন দেশে কীভাবে লাঞ্চনা ভোগ করেছে দেশবাসী। ১৯৪৭ সালেই যা শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা ঘটেনি। শুধুমাত্র নির্যাতনের হাত থেকে বদল হল ব্রিটিশ থেকে পাকিস্তান। একটি পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়। তথন থেকেই পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী বাঙালির উপরে শাসন, শোষণ এবং নির্যাতন চালায়। দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ভারত স্বাধীন হয়।
এরপরই ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চলে। বঙ্গবন্ধু লড়াই চালিয়ে যান। ৬২টি শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬-র ৬ দফা, এবং গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতার জন্য প্রায় প্রস্তুত হয়ে ওঠে। তারপরই ১৯৭০ সালে আওয়ামি লীগ সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জন করে। এটি আরও বেশি করে আত্মবিশ্বাস জাগায় বাঙালিকে। বঙ্গবন্ধু তখন অনুভব করেছিলেন বাঙালি জাতির ওপর কীভাবে অত্যাচার চালানো হচ্ছে, নির্মমভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। তারপরের বছর অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, এইবারের সংগ্রাম দেশের মুক্তির সংগ্রাম। স্বাধীনতার সংগ্রাম। তারপর থেকেই মূলত শুরু হয় স্বাধীনতার লড়াই।
বঙ্গবন্ধু ডাক দেন অসহযোগ আ্দোলনের। মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি চলে। সেই বছর ২৫ শে মার্চ পাকিস্তানি হানাজার রা বাংলাদেশের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা ঘোষণা করেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। চলে দীর্ঘ ৯ মাস সংগ্রাম। তারপর চূড়ান্ত বিজয় ঘোষিত হয়।
বাঙালির এই সংগ্রামে পাশে দাঁড়ায় ভারত। এমনকি সোভিয়েত ইউনিয়ন-সহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র এগিয়ে আসে।
আজও বাঙালি জাতি স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে। স্মরণ করে এই সংগ্রামে সামিল হওয়া প্রতিটি যোদ্ধাদের। এমনকি, জাতীয় চার নেতা, ৩০ লক্ষ শহিদ এবং ২ লক্ষ নির্যাতিত মা-বোনের অসম্ভব ত্যাগ ছিল এই সংগ্রামের অংশীদার।
বহু ত্যাগের ফলে অর্জিত হয়েছিল স্বাধীনতা। পরবর্তীকালে জাতির পিতা শেখ মুজিবর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সোনার বাংলায় পরিণত হবে বলে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যান নেতৃত্ব। তাদের বক্তব্য, বিজয় দিবসে প্রত্যেকেই এই প্রত্যাশায় রাখেন। যেখানে মুজিবর রহমানকে হগত্যা করা হলেও আদর্শিক মুজিবকে হত্যা করা যাবে না।
যদিও আজকে ২০২৪-এ দাঁঢ়িয়ে প্রেক্ষাপটটা খানিকটা আলাদ। যে মুজিবর রহমান দেশের প্রতিনিধি হয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেল দেশকে, নিজের জীবন দিয়ে রক্ষা করেছিল, সেই জাতির পিতাৈর কন্যাকে দেশ ছাড়তে হয়েছে। অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে পার হচ্ছে গোটা দেশ। নির্যাতন, নিপীড়ণ, নির্মমভাবে চলছে ধ্বংসলীলা। কিন্তু এই বাংলাদেশ একেবারেই চেনা নয়। অন্তত যারা দেশের জন্য শুভাকাঙ্খি তারা মনে করেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ চিরন্তন। বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ একে অপরের পরিপূরক।
Discussion about this post