গতকাল ছিল বিজয় দিবস। প্রত্যেক বছর বাংলাদেশ-সহ ভারতে সাড়ম্বরে পালিত হয় এই দিনটি। কিন্তু এবছর পরিস্থিতি একেবারে উল্টো। ভারতে পালিত হলেও বাংলাদেশের কয়েকটি জায়গায় তা পালন হয়েছে। এরমধ্যেই সমস্ত কড়া নজরদারি ভেদ করে হাসিনার শুভেচ্ছার ফুল পৌঁছে গেল জাতীয় স্মৃতিসৌধে। রক্তগোলাপের স্তবক নিয়ে এলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের জেরে হাসিনা সরকারের পতন ঘটেছে। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছেন। ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। এখনও ভারতে শেখ হাসিনা নিরাপদ স্থানে রয়েছেন বলে খবর। আর তারমধ্যে এল ১৬ই ডিসেম্বর। যা বিজয় দিবস হিসাবে প্রত্যেকে পালন করে। সাভারের জাতীয় স্মৃতীসৌদে ভেসে যায় জনস্রোত। এবছরও অবশ্য দেখা গিয়েছে সেই ছবি। একদম কাকভোরে, সবার আগে বিজয় দিবসের ফুলের শুভেচ্ছা দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে এশেছেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
এদিন দেখা গেল ঢাকার পল্টন ময়দানে জামায়াতে ইসলামীরা জনসভা করছেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার বিরোধীতা করে তাদের এি জনসভা। পাশাপাশি উঠল ভারত বিরোধী জিগির। মোটরবাইকে করে মিছিল করে চলল শোভাযাত্রা। প্রত্যেকের হাতে রয়েচে ধর্মীয় পতাকা। এমনকি, শেখ মুজিবর রহমানের বাসভবনে শ্রদ্ধা জানাতে গেলে তাদের হটিয়ে দেয় পুলিস। পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয়। জানা যায়, আওয়ামী লীগের কর্মীরা সেখানে মিছিল করার চেষ্টায় ছিলেন।
অন্যদিকে, মহম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্য ভাষণ দেন। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ লক্ষ শহীদের উদ্দেশ্য শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। কিন্তু তিনি শেখ মুজিবর রহমানের নাম উল্লেখ করেননি। এমনকি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল, তা নিয়েও কোনও মন্তব্য করেননি ইউনূস। কারণ, পাকিস্তান এখন তাদের মিত্র দেশ। সমস্ত দিক থেকে তারাই সাহাষ্য করছে বাংলাদেশকে। বিজয় দিবসে ইউনূসের বক্তব্যে মূলত উঠে এসেছে, হাসিনা বিরোধী জিগার। সঙ্গে চলে আওয়ামী লীগকে আক্রমণ। তবে সাড়ে চার মাসে এই প্রথম নির্বাচনের সম্ভাব্য দিনক্ষণের কথার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। তিনি জানান, কেউ কেউ চাইছেন, নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। তার ভিত্তিতেই শেষে জানান, ২০২৫ সালের শেষ অর্থাৎ ২০২৬ সালের প্রথম দিকে নির্বাচন করা যায়।
অন্যদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন, আজ বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয়ের দিন। ভারত ছিল এই বিজয়ের মিত্র। মোদীর এই বার্তার সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আব্দুল্লাও। তিনি বিরোধীতা প্রকাশ করেন। কার্যত, প্রতিটি ক্ষেত্রে বোঝা যাচ্ছে, ভারতকে তারা শত্রু দেশ হিসাবে ভাবতে শুরু করেছে। শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকভাবে তা ঘোষণা করার দিন বাকি। যদিও চুপ করে বসেন নেই নয়া দিল্লিও। সমস্ত রকমের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। শুধুমাত্র বাংলাদেশের সরকারকে কড়া বার্তা নয়, একাধিক পদক্ষেপ করছে।
Discussion about this post