বাংলাদেশের তদারকি সরকার এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছে৷ কার্যত একাধিক ফ্রন্টে সংকটের সম্মুখীন এই দেশ। এর পাশাপাশি তাদের হিন্দু এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংস অত্যাচারের ছবি গোটা বিশ্বের সামনে উঠে এসেছে৷
উল্লেখ্য, বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ- মায়ানমার সীমান্তেও উত্তেজনা বেড়েছে। আরাকান আর্মি নামে পরিচিত মায়ানমারের একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে৷ একদিকে ভারত যখন ইতিমধ্যে বাংলাদেশের উপর কৌশলগত চাপ প্রয়োগ শুরু করেছে, অন্যদিকে আরাকান আর্মি এখন তার দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্রোহের আগুন সঞ্চার করেছে। এক সপ্তাহের একেবারে ভোলবদল হয়েছে সার্বিক পরিস্থিতির। প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে যে আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সীমান্তে পৌঁছেছে এবং কিছু এলাকা ইতিমধ্যেই দখল করেছে। যার ফলে এখন বাংলাদেশের শিয়োরে সংক্রান্তি! সীমান্তের নিকটবর্তী মায়ানমার মিলিটারির ওয়েস্টার্ন কমান্ড দখল করলো আরকান আর্মি। এই ওয়েস্টার্ন কমান্ডের সদর দফতর বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া রাখাইন প্রদেশে অবস্থিত। তাই এই পরিস্থিতিতে চাপে পড়ছে বাংলাদেশ তা বলাই যায়।
উল্লেখ্য গত কয়েক সপ্তাহে মায়ানমার সীমান্ত লাগোয়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লাগাতার গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে এসেছে । বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম গুলির রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বুধবার রাতেও কিছুসময় বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। মাঝে নয় দিন এই বিস্ফোরণ বন্ধ থাকলেও বুধবার রাতে ঘণ্টাখানেক ফের শুরু হয়েছে গোলাগুলি, বিস্ফোরণ। সেই পরিস্থিতিতে নতুন করে স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্কে দিন কাটছে, রাতের ঘুম উড়েছে বলে দাবি করা হয় টেকনাফ প্রশাসনের তরফে।
উল্লেখ্য, মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি কিছুদিন আগেই মায়ানমারে মংডু এলাকা দখল করেছে। এর ফলে বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ এবং আগে আসা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা জোড়ালো হয়েছে। সম্প্রতি মায়ানমারে আরও একটি এলাকা চলে গেছে আরাকান আর্মির দখলে। ফলে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা দখল হওয়ায় বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সমস্যা বাড়তে পারে।
প্রসঙ্গত,বিদ্রোহী গোষ্ঠী নিজেদের ঘোষণায় দাবি করেছে বাংলাদেশের দিকে আরাকান আর্মির অগ্রসর হওয়ার একটি সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্ত বরাবর জিহাদি ও চরমপন্থী দলগুলি বৌদ্ধ ও হিন্দুদের ওপর নিপীড়ন,হামলা ও নৃশংসতা চালাচ্ছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলিতে, রোহিঙ্গা সলিডারিটি আর্মি, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি এবং আরাকান রোহিঙ্গা আর্মির মতো ১০ টিরও বেশি জঙ্গি গোষ্ঠী রয়েছে যারা হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ সহ একাধিক অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
তদুপরি, আরাকান আর্মি অভিযোগ করে যে এই জিহাদি দলগুলোর আল-কায়েদা এবং জামায়াত-ই-ইসলামির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্কের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই জিহাদিরা মংডুর মুসলিম জনসংখ্যাকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়কে বৌদ্ধ ও হিন্দু সহ অমুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য উস্কানি দিচ্ছে৷
প্রসঙ্গত, মায়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ, মায়ানমার, ভারত, চীন, লাওস ও কম্বোডিয়া-এই ছয় দেশের বিদেশমন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠকের আয়োজন হয়েছে। সূত্রের খবর, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ওই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন।
Discussion about this post