এইবার গুয়াহাটি হাইকোর্ট যে রায় দিল তা নিশ্চিতভাবে মহম্মদ ইউনূস এর কাছে চিন্তার কারণ। ভারত থেকে ২৫০০০ বাংলাদেশিকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিলেন গুয়াহাটি হাইকোর্ট। এর ফলে বাংলাদেশ সরকার এই ২৫০০০ বাংলাদেশিকে যে কোথায় স্থান দেবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ঠিক কি ঘটেছে, চলুন দেখা যাক।
একটি নজিরবিহীন রায় দিল গুয়াহাটি হাইকোর্ট। গুয়াহাটি হাইকোর্ট পরিষ্কার বলে দিয়েছে, যারা ১৯৬৬ সালে ২৫ মার্চের পর যারা ভারতে এসেছেন তারা কিন্তু অনুপ্রবেশকারী হিসাবে চিহ্নিত হবে। তাদের ভারত থেকে বাংলাদেশে চলে যেতে হবে কিছুদিনের মধ্যে। সেই সংখ্যাটা শুধুমাত্র আসামে ২৫০০০। জানা যাচ্ছে, একটি মহিলাকে ঘিরে যত ঘটনার সূত্রপাত। বেগম জান বলে একজন মহিলা যখন ভারতে আসে, তার ৩০ দিনের মধ্যে বিদেশী নথিভুক্ত অফিসে নোটিফাই করতে হত। তার পরিচয় গোপন না করে, বাংলাদেশ থেকে তিনি যে এসেছেন সেটা জানাতে হত বিদেশী নীতিভুক্ত অফিসে। কিন্তু তিনি তা করেননি। পরবর্তীকালে জানা যায়, তিনি যে বাংলাদেশী তা ভারতীয় আধিকারিকরা ধরে ফেলেন। পরে বিষয়টি সামনে এলে তিনি জানান, কিছুদিন ভারতে থাকবেন।
সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়ে একটি কেস উঠে। সেখানে বলা হয়, করা অনুপ্রবেশকারী, করা বাংলাদেশী এবং করা ভারতীয়, সেগুলি নির্দিষ্ট করে কিভাবে ঠিক করা হবে, সেই নিয়ে মামলা হয়ে সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছয়। সেখানে কিছু যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্ট। ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে যারা বাংলাদেশ থেকে ভারতবর্ষে এসেছিলেন তাদের সকলকেই অনুপ্রবেশকারী হিসাবে চিহ্নিত করা হবে। আরও নির্দিষ্ট করে বলা হয় সুপ্রিম কোর্টের তরফে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগে যারা এসেছিলেন তারা অনুপ্রবেশকারী হিসাবে চিহ্নিত হবেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ২৫শে মার্চের আগে কেন? কারণ ২৫ শে মার্চ এই পাকিস্তান অপারেশন সার্চ লাইট শুরু করে। অর্থাৎ ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যবর্তী সময়ে ২৪ শে মার্চের আগে যারা এসেছিলেন, তাদেরকেও অনুপ্রবেশকরি হিসাবে চিহ্নিত করতে হবে। তা কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের তরফে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়। সেই ঘটনার মামলা ধরেই বেগম জান বলে মহিলাকেও গুয়াহাটি হাইকোর্ট এর তরফে এই রায় দেওয়া হয়। কারণ তিনি ২০২০ সালে এই দেশে এসেছেন। এবং দিনের পর দিন নিজের পরিচয় আত্মগোপন করে ভারতের মধ্যে বাস করছেন। শুধু তাই নয় তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এসেছিল। তিনি ভারতীয় বিদেশি অফিসে নিজের নাম নথিভুক্ত করেননি। সে কারণেই ২০২০ সালেই তার বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং তারপর এই গোয়াহাটি হাইকোর্ট এই সিদ্ধান্ত নেয়।
এই ঘটনার পর আরো বলা যায় ভারতবর্ষের আইন অনুযায়ী নাগরিকত্ব নিয়ে কড়াকড়ি করা হচ্ছে এবং যেকোনো মুহূর্তে রায় ঘোষিত হলে সবথেকে বেশি চাপে পড়বে বাংলাদেশ তা বলাই যায়। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের যে অরজগতের সৃষ্টি হয়েছে তার মধ্যেই ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে ইউনূস। কিন্তু উল্টো দিকে ভারত যদি নাগরিকত্ব নিয়ে কড়াকড়ি করতে শুরু করে তাহলে কি পালিয়ে বাঁচতে পারবে বাংলাদেশ? সে প্রশ্নই কার্যত উঠছে। তবে এখন দেখার ঠিক কি পরিস্থিতি তৈরি হয়।
Discussion about this post