নয়া ওয়াকফ আইন, ২০২৫-এর বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে বিক্ষোভ হিংসার রূপ নিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত করেছে, পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়েছে, পুলিশের গাড়ি এবং যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে নির্বিকার পুলিশ। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে যখন ব্যর্থ হলে তখন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ, মুর্শিদাবাদে জঙ্গিপুরের কেন্দ্রীয়বাহিনী মোতায়েন করার।
সূত্র বলছে নতুন সংশোধনী ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভ মিছিলে পথে নেমেছিলেন বেশ কিছু সংগঠন। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হওয়ায় এই আন্দোলন বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে মুর্শিদাবাদ থেকে মালদার বিভিন্ন এলাকায়। এরপর দেখা গিয়েছে বিক্ষোভকারীরা রেলপথ অবরোধ করে এবং ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ ওঠার পর ভারতীয় রেল ট্রেন বাতিল করে এবং কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তন করে। এমনকি বিক্ষোভকারীরা সমসেরগঞ্জে মহাসড়ক অবরোধ করে, যার ফলে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। তারা পুলিশ কর্মীদেরও লক্ষ্য করে হামলা চালাতে থাকে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যখন ব্যর্থ রাজ্য পুলিশ তখন ঘটনাস্থলে নেমেছে বিএসএফ । তারইমধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি তোলেন শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতার আর্জিতে এবার সাড়া দিয়ে কেন্দ্র বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের স্পেশাল বেঞ্চের।
শনিবার হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি রাজা বসুচৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, অপ্রীতিকর হিংসার অভিযোগ এলে আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। শান্তিরক্ষা এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে রাজ্য পুলিশকে কাজ করতে হবে। যারা প্রকৃত দোষী, তাদের চিহ্নিত করারও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি রাজ্যের অন্যান্য এলাকাতেও এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টের স্পেশাল বেঞ্চের তরফ থেকে।
পাশাপাশি, মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের অশান্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মুর্শিদাবাদে গিয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার।
ডিজি রাজীব কুমার জানান, “সরকারের দিক থেকে স্পষ্ট বলা আছে কোনওরকম অপ্রীতিকর কার্যকলাপ বরদাস্ত করা যাবে না। আমরা শক্ত হাতে গোটা পরিস্থিতির মোকাবিলা করছি। ” রাজ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার কি বলেছেন শুনুন,
একদিকে যখন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় যারা আন্দোলনের নেমেছেন তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হচ্ছে রাজ্য পুলিশ অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে অন্য এক চিত্র সুপ্রিম কোর্টের রায় চাকরি বাতিল হয়েছে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের।শিক্ষকদের একটা বড় অংশ এখন বিপন্ন। যারা প্রকৃত মেধাবী ও যোগ্য হয়েও আজ চাকরিহারা। তাঁরা রাস্তায় নেমে এসেছেন এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে। অথচ চাকরিহারা সেই শিক্ষকদের ওপর নির্মম লাঠিচার্জ করলো কলকাতা পুলিশ। তাতেও তৃপ্তি মেটেনি কিছু পুলিশ আধিকারিকের, তাঁরা আন্দোলনরত শিক্ষকদের লাথি মারতে ছাড়লেন না। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, যারা দেশের ভবিষ্যত গড়ার কারিগর তাদের প্রতিহত করতে সিদ্ধহস্ত রাজ্য আর অন্যদিকে যারা রাজ্যের স্থিতিশীলতাকে কালিমা লিপ্ত করছে সেই ওয়াকফ আইন বিরোধী গোষ্ঠীকে প্রতিহত করতে নির্বিকার রাজ্যপুলিশ।
Discussion about this post