চীনের জন্য বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা কি উন্মুক্ত হতে চলেছে? আর তারই উপহার হিসাবে বাংলাদেশ পাচ্ছে হাসপাতাল? এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে। সম্প্রতি চীন সফর করেছেন, বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনূস। আর সেখানে গিয়ে একটু বিতর্কিত মন্তব্য করে এসেছেন। তিনি বলেছিলেন, ভারতের সেভেন সিস্টার্স অর্থাৎ পূর্ব প্রান্তের সাতটি রাজ্য ল্যান্ডলক বা স্থল বেষ্টিত। সমুদ্র পথে যোগাযোগ করার কোনও উপায় নেই তাদের। বাংলাদেশই হল সমুদ্রের অভিভাবক। ফলে ওই জায়গায় চীন অর্থনীতির বিস্তার করতেই পারে। আর এখানেই কূটনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের জন্য ভারত মহাসাগরের পথ খুলে দেবেন ইউনূস? তবে সত্যিই কি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা চীনের জন্য খুলে দেবেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা? যার বিনিময়ে বাংলাদেশের মধ্যে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল তৈরি করতে চলেছে চীন। এটা কি সেটারই প্রাপ্তি? উঠে আসছে প্রশ্ন।
বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা যদি চীনকে বাংলাদেশের সরকার ছেড়ে দেয়, তবে মার্কিন প্রশাসন অর্থাৎ ডোনাল্ড ট্রাম্প এটিকে কিভাবে নেবেন? যদিও সেটির আগে উঠে আসছে ভারত এটিকে কিভাবে দেখবে? সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, শেখ হাসিনা জমানার পতনের পর বাংলাদেশে প্রবলভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে ভারত বিদ্বেষী মনোভাব। এদিকে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশে নিবিড় সম্পর্ক অনেক আগে থেকেই। ফলে সমীকরণটা এমন দাঁড়াচ্ছে, চীন প্রীতি মনোভাব বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের। অর্থাৎ বাংলাদেশে প্রবল ভারত বিদ্বেষী মনোভাবের সময়টাকে কাজে লাগাতে চাইছে চীন। আগে শোনা গিয়েছিল, দিল্লিকে টেক্কা দিতে নাকি বাংলাদেশীদের জন্য চীন হাসপাতাল বানাবে। জানা যাচ্ছে, চীনের শহর কুনমিংয়ে তিনটি হাসপাতালকে বাংলাদেশীদের জন্য করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবার এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানান, বাংলাদেশে ১ হাজার শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল তৈরি করবে চীন। হাসপাতালটি হবে রংপুরে। এমনকি এই হাসপাতালটি গড়ার জন্য জমি খোঁজা চলছে।
শোনা যাচ্ছে, চিন-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বেজিং উপহার হিসেবে এই হাসপাতালটি নির্মাণে অর্থ বিনিয়োগ করবে। নূরজাহান বেগম আরও জানান, জুলাই আন্দোলনের যোগ দেওয়া আহতরা চিকিৎসা পাবেন। আহতদের পুনর্বাসনের জন্য চিন সরকার এটি সাহায্য হিসেবে দিচ্ছে। অর্থাৎ জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করতে চলেছে চীন সরকার। হাসপাতালের নাম ঠিক হয়েছে, ‘চিন-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল’।
তবে সেটি শুধুমাত্র দুই দেশের ফ্রেন্ডশিপ বাড়ানোর জন্য, নাকি সমুদ্রসীমা ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিতেই এই সিদ্ধান্ত চীনের, সেটা সময় বলবে।
Discussion about this post