বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনে নথিভুক্ত রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি বা বিএমজেপি। যার পতাকার রং ও নকশা অবিকল ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি-র মতো। ফলে বাংলাদেশ জুড়েই শুরু হয়েছে জোরদার চর্চা। মূলত বাংলাদেশে বসবাসকারী সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে এই রাজনৈতিক দল। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন টালবাহানা করছিল বিএমজেপি-কে নিবন্ধন দিতে। অবশেষে আদালতে মামলা লড়ে এই নিবন্ধন আদায় করে নিল বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জন্য গঠিত এই রাজনৈতিক দল। বিএমজেপির প্রেসিডেন্ট সুকৃতিকুমার মণ্ডল উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এই স্বীকৃতি আদায় করার পর। তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আমাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর আমরা রাজনীতির স্বাদ গ্রহণ করতে পারব। এই স্বীকৃতিলাভের ফলে বাংলাদেশের ৩ কোটি সংখ্যালঘু মানুষ রাজনীতি করার অধিকার পেল।
প্রসঙ্গত, সেই ২০১৮ সালে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ মাইনোরিটি জনতা পার্টি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন আবেদন জানিয়েও নিয়মের জটিলতায় তখন স্বীকৃতি পায়নি দলটি। বিএমজেপির সভাপতি সুকৃতি কুমার বলেন, “২০১৮ সালে নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছিলাম। বিশেষ কারণে নিবন্ধন ওই সময় পাইনি৷ বাছাইয়ে আমরা ছিলাম। পরে দুইটি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু আমাদের দেওয়া হয়নি। আমরা প্রতিবাদ জানাই এবং আদালতের দ্বারস্থ হই।
মজার বিষয় হল, বাংলাদেশ মাইনোরিটি জনতা পার্টির পতাকার নকশা অনেকটাই ভারতের বিজেপি-র মতোই। সবুজ ও গেরুয়া রঙের। তবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বিএমজেপি-কে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে রকেট চিহ্ন প্রদান করেছে। যেখানে ভারতের বিজেপির পদ্ম চিহ্ন রয়েছে। ফলে অনেকেই মনে করছেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু অর্থাৎ হিন্দু ও বৌদ্ধদের জন্য এই রাজনৈতিক দল আদতেই ভারতীয় জনতা পার্টির ছায়া। কিন্তু জানা যাচ্ছে, নতুন এই রাজনৈতিক দল দীর্ঘ লড়াইয়ের পর সরকারি নিবন্ধন পেলেও তাঁদের কোনও কার্যালয় নেই। এমনকি তাঁদের কর্মীও নেই। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনে যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে, সেটাও তবে সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাঁরা এবার সদস্য ও কর্মী সংগ্রহ করতে ময়দানে নেমে পড়বেন।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার ও হামলা নিয়ে ক্রমাগত সরব হয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তাঁরা এই বিষয়ে ক্রমাগত বাংলাদেশের তদারকি সরকারকে চাপ দিয়ে চলেছে। এমনকি সফল কূটনৈতিক চালে আন্তর্জাতিক মহলেও বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ইস্যুটি তুলে ধরেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। মনে করা হচ্ছে, সেই চাপের কাছেই নতীস্বীকার করে বাংলাদেশ সংখ্যালঘু জনতা পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়া হল। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে প্রায় তিন-সাড়ে তিন কোটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন। যারা মূলত আওয়ামী লীগকেই সমর্থন করেন, আবার অনেকে বিএনপি-কে। এবার পুরোদস্তুর রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ মাইনোরিটি পার্টি বা বিএমজেপি নিবন্ধন পাওয়ায় পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে তাঁরা এই দুই দলের সংখ্যালঘু ভোটে ফাটল ধরাতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
Discussion about this post