বাংলাদেশের পোশাকশিল্প এবার বড় ধাক্কার সম্মুখীন। সেদেশের অন্তরবর্তী সরকারের প্রধান মোহাম্মদ ইউনুস একজন অর্থনীতিবিদ হওয়ার পরেও সে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আজ বিপর্যস্ত। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যেমন থাবা বসে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তেমনই ভারত তার কৌশলী চালে চাপে ফেলেছে বাংলাদেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রগুলিকে। আর সমস্ত চাপে পড়ে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প যখন অস্তিত্বহীনতার মুখে তখন লাভবান হচ্ছে ভারত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে।বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন, যা এশিয়ার এ স্বল্পোন্নত দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাতকে কঠিন সংকটে ফেলতে পারে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার, ব্যবসায়ী ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অংশীদারদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় প্রয়োজন।
আবার এরপরই গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। এই সুবিধার মাধ্যমে এতদিন ভারতের বন্দর ব্যবহার করে অন্য দেশে পণ্য পৌঁছাতে পারতো বাংলাদেশ। ফলে এই সুবিধা বাতিলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ট্রান্সশিপমেন্ট প্রক্রিয়ায় ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় কোনও দেশে পাঠানোর এই সুবিধা এতদিন পেয়ে আসছিলো বাংলাদেশ। ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে ইউরোপ-আমেরিকায় তৈরি পোশাকসহ যেসব পণ্য রপ্তানি হয়, ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের কারণে সেগুলো এখন বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে কিছুটা হলেও বিপাকে পড়বে দেশের তৈরি পোশাক খাত।
কিন্তু এবার বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে ধরাশায়ী করতে যে নতুন তথ্য সামনে আসছে সেই চাল ভারত বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে নয়। স্বয়ং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুশ্রী এবার নতুন কৌশলে আরো কিছুটা বিপর্যস্ত করলো সেদেশের পোশাক শিল্পকে। বাংলাদেশ এবার এক কঠোর অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিল। এনবিআর নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ভারত থেকে সুতাসহ আরো অন্যান্য পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বাংলাদেশ । এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্পে একটি বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে, কারণ দেশের পোশাক শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সুতার প্রায় ৯০ শতাংশই ভারত থেকে আসে।
বাংলাদেশের বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ এবং বুড়িমারি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপটি এসেছে বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্প মালিকদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে, যারা স্থানীয় সুতা উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়ে আসছিলেন। যদিও বাংলাদেশ চীন ও তুরস্ক থেকেও সুতা আমদানি করে, তবে ভারতীয় সুতার আধিপত্য ছিল অনস্বীকার্য। কিন্তু মোহাম্মদ ইউনুস মনে করছে তার এই সিদ্ধান্ত ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করার পাল্টা জবাব।
এছাড়া ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘সেভেন সিস্টার্স’ মন্তব্য এবং বাংলাদেশকে সমুদ্র অঞ্চলের অধিপতি হিসেবে উল্লেখ করায় চীন-ঘনিষ্ঠ নীতিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। এরপর থেকেই ভারত একের পর এক কূটনৈতিক কৌশলে বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে শুরু করেছে। ট্রান্সলেট সুবিধা বাতিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চড়াহারে শুল্ক আরবের ফলে এমনিতেই বাংলাদেশের পোশাক শিল্প মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না এরপর স্বয়ং মোহাম্মদ ইউনুস এর এই ভারত বিরোধী চাল পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করলো।
Discussion about this post