রক্ত আর জল কখনোই একসঙ্গে বইতে পারে না! ভারত সিন্ধুর জলেই মাত করতে চাইছে পাকিস্তানকে! সম্প্রতি ভারতের প্রধান নরেন্দ্র মোদি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ কথার মাঝে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পয়েন্টে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন রক্ত আর জল একসঙ্গে বইতে পারে না। অর্থাৎ পাকিস্তান রক্তপাত করতে চায় সেই রক্তপাতের জায়গায় ভারত জল পৌঁছাতে দেবে না। এখানে জল বলতে স্বাভাবিকভাবেই সিন্ধুর জল বন্টন চুক্তিকেই ইঙ্গিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার জেরে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। তাতেই ঘুম ছুটেছে পাকিস্তানের। ভারতের ওই সিদ্ধান্তের পর পাকিস্তানের ভেতরে ৯ জঙ্গিঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে ভারত। তাতে দিশাহারা পকিস্তান। ভারতের প্রত্যাঘাত পাকিস্তান মেনে নিতে না পেরে পাল্টা হামলা চালায় ভারতের ওপর। এরপর সিদ্ধহস্তে ভারত পাকিস্তানের লাহোর, শিয়ালকোট, রাওয়ালপিন্ডি, গুজরানওয়ালার মতো শহরে হামলা চালিয়েছে। পাকিস্তানের একাধিক সেনা ঘাঁটিতেও আঘাত হেনেছে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী। অর্থাৎ এখনো অব্যাহত ভারত-পাক সংঘাতের পরিস্থিতি। তবে শুধু সামরিক দিক থেকেই নয় কূটনৈতিক দিক থেকেও ভারতের চাপে পড়তে হয়েছে পাকিস্তানকে।
উল্লেখ্য,পহলেগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরই ভারত স্থগিত করেছে সিন্ধু জলচুক্তি। বন্ধ চেনাব নদীর বাগলিহার ও সালাল বাঁধের গেট। এই নদীর জলই বাগলিহার ও সালাল বাঁধের মাধ্যমে যেত পাকিস্তনে। কিন্তু বাঁধের গেট বন্ধ করায় চেনাব নদীর নিচের অংশ শুকিয়ে রয়েছে। পাকিস্তানকে কূটনৈতিক চাপে ফেলতেই ভারত এই পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই অস্থায়ী বাঁধের গেট বন্ধ রাখলে পাকিস্তানে কী কী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ?
ভারতের এই কূটনৈতিক পদক্ষেপে উদ্বিগ্ন পাকিস্তান। কারণ চেনাব নদীর জল পাকিস্তনের জন্য অপরিহার্য ।পাকিস্তানের প্রায় ৮০ শতাংশ সেচযুক্ত কৃষিক্ষেত্র চেনাব নদীর জলের ওপর ভরসা করে থাকে। পাকিস্তানের মধ্যে দিয়ে প্রায় ৭০০ মিটার প্রবাহিত হয়েছে চেনাব নদী আর সেটির সেচ ব্যবস্থা। পাশাপাশি, পাকিস্তানে চাষাবাদের জন্য এই সময়টা গুরুত্বপূর্ণ। এখন তুলো চাষের উপযুক্ত সময়। চেনাব নদীর জল কমে যাওয়ায় সংকটে পড়ছে তুলো চাষীরাও। যা ক্ষতির মুখে ফেলবে পাকিস্তানের টেক্সটাইল শিল্পকে।
তবে, ভারতের আক্রমণে বেসামাল পাকিস্তান, সংঘর্ষবিরতিতে বাধ্য হয়েছে। এবার সেই সংঘর্ষবিরতি শুরু হতেই সুর বদল পাকিস্তানের।
পাক বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার হুমকির সুরে জানিয়েছেন, সিন্ধুর জল সমস্যা না মিটলে দুদেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি আবার হুমকির মুখে পড়বে। অর্থাৎ তিনি মনে করেন জল সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতা যুদ্ধের সমান।
মাত্র কয়েকদিনের হামলায় ভারতের সঙ্গে আর এঁটে উঠতে পারছে না পাকিস্তান। তবে একটু থীতু হতেই সিন্ধু জলচক্তি স্থগিত করার প্রসঙ্গে ভারতকে করা হুশিয়ারি দিতে থাকে পাকিস্তান। তবে ভারত সরকার যে পাকিস্তানকে আর ছেড়ে কথা বলবে না সেটাও স্পষ্ট প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ থেকে। কৌশলী সুরে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ বন্ধ না করলে সন্ত্রাসবাদি রাষ্ট্রে জল পাঠাবে না ভারত। তবে, ভারতের একের পর এক কূটনৈতিক চালে বিপর্যস্ত হয়ে নিজেদের সম্মান রক্ষায় ফাঁকা আওয়াজ দিতে শুরু করেছেন পাক সরকার।
Discussion about this post