বৃষ্টিতে ভিজে হোক, ঠান্ডা গরমে কিংবা মশার কামড়ে। জ্বর, সর্দি কাশি যেন আমাদের নিত্যসঙ্গী। তবে সব জ্বরই যে সাধারণ তা কিন্তু নয়। ছোট্ট মশার কাপড়ও কখনও হয়ে ওঠে ভয়াবহ। কখনও কখনও এই ম্যালেরিয়ার প্রকোপে প্রাণহানীও হয় অনেকের। আচ্ছা হলুদ জ্বরের কথা শুনেছেন কখনও। জ্বরের এরকম নাম শুনে অবাক হলেন তাই না! এই জ্বর সাধারণত স্বল্প সময়ের জন্য একটি ভাইরাল অসুখ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর, ঠান্ডা লাগা, খিদে কমে যাওয়া, বমি বমি ভাব, বিশেষ করে পিঠে ও মাথার ব্যাপক যন্ত্রণা। শুধু তাই নয়, সেই সঙ্গে চোখ ও ত্বকেও হলুদ ভাব দেখা দেয়। এই উপসর্গগুলি যদি লক্ষণ করেন, তাহলে আর দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যান।
হলুদ জ্বর ছড়াচ্ছে আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার ক্রান্তীয় অঞ্চলে। ক্রান্তীয় এই অঞ্চল দীর্ঘকাল ধরে হলুদ জ্বরের আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত। জানা যায়, এই রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছিল মধ্য ও উপকূলীয় দক্ষিণ আমেরিকায়। হলুদ জ্বরে আক্রান্তকারীদের অনেকের প্রাণহানীও হয়েছে। ক্রান্তীয় এই অঞ্চল মানেই নাম না জানা নানা গাছ গাছালির অভয় অরণ্য। অ্যাডভেঞ্চারের জন্য গভীর অরণ্যে গিয়ে দেশ বিদেশে ভ্রমণ করতে কে না ভালোবাসে। তাই যে সকল ভ্রমণপিপাসুরা মনে করছেন আফ্রিকা বেড়াতে যাবেন, তাঁদের জন্য এবার টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ তমিলনাড়ু সরকারের।
সম্প্রতি, তামিলনাড়ু জনস্বাস্থ্য ও প্রতিরোধী ওষুধ দফতরের তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি করে জানিয়েছে, তিনটি সরকারি কেন্দ্র খোলা রয়েছে। কেন্দ্রগুলি হল গুইন্ডির কিং ইনস্টিটিউট ফর প্রিভিন্টিভ মেডিশিন অ্যাণ্ড রিসার্চ, চেন্নাইয়ের রারাজি সালাই এবং থুথুকুড়ি। এই কেন্দ্রগুলিতে চলছে হলুদ জ্বরের টিকা দেওয়ার কাজ । সেই সঙ্গে তামিলনাড়ু সরকারের তরফে এও জানানো হয়েছে, হলুদ জ্বরের এই টিকা কখনওই সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা দিতে পারবে না। টিকা দেওয়ার জন্য শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কেন্দ্রে ও নির্ধারিত সময়ে এসে তবেই এই হলুদ জ্বরের টিকা নিতে পারবেন গ্রাহকরা। টিকার প্রতি ডোজের দাম ধার্য্য করা হয়েছে মাত্র ৩০০ টাকা মূল্যে। এই টাকা কোনও ব্যক্তি ব্যাঙ্ক মারফত বা নগদও দিতে পারেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, হলুদ জ্বর মশা বাহিত রোগ। সাধারণত এই মশা ম্যালেরিয়ার মশার মতই দিনের বেলা কামড়ায়। সেই সঙ্গে সংক্রামক মশার কামড়ের ফলে ভাইরাসটি ওই ব্যক্তির শরীরের মধ্যে বেশ কয়েকদিন ইকিউবিশন পিরিয়ডে থাকে। সেই সময় থেকেই উল্লিখিত লক্ষণগুলি দেখা দিতে থাকে। ২০২৩ সালে এই জ্বর থাবা বসিয়েছিল আফ্রিকার ৩৪ টি দেশে ও মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার ১৩ টি দেশকে। এই জ্বর টিকার মাধ্যমেই প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে জানিয়েছে ‘হু’।।
Discussion about this post