চোপড়ায় যুগলকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটানো তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার সন্ধে তাঁকে গ্রেফতার করে ইসলামপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা যাচ্ছে। ধৃতের নাম তাজমুল হক ওরফে জেসিবি। এবার চোপড়া কাণ্ডে আরো দুইজনকে গ্রেফতার করলো পুলিশ। ধৃতদের নাম আব্দুল রউফ ও তাহের ইসলাম। অপরদিকে বৃহস্পতিবার নির্যাতিতদের সঙ্গে কথা বলতে লক্ষীপুর গ্রামে পৌঁছান ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটসের চার সদস্যের প্রতিনিধিরা। টানা দুই ঘণ্টা চোপড়ার ওই নির্যাতিত যুবক-যুবতীর সঙ্গে কথা বললেন ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিটির প্রতিনিধিরা। তাঁদের বয়ান লিপিবদ্ধ করা হয়। পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন। এছাড়াও কিছু প্রতিবেশীর সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে বলে জানা যায়। এলাকার মানুষদের থেকে বিস্তারিত খোঁজখবর নেন।
এরপর বাড়ি থেকে বেরিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি তাঁরা। চারজনের এই প্রতিনিধি দলে একজন মহিলা আধিকারিকও রয়েছেন। ঘটনার ভিডিও দেখেই এদের চিহ্নিত করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে গত সপ্তাহে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় এক তরুণীকে রাস্তার মধ্যে ফেলে এক ছড়া কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক মারছেন জেসিবি। মার খেতে খেতে গুটিয়ে যাওয়া মেয়েটিকে চুলের মুঠি ধরে টেনে এনে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলা হচ্ছে। তার পরে আবার শুরু হচ্ছে মার। একইসঙ্গে এক তরুণকেও একই ভাবে মারতে দেখা যায় তাঁকে। যা প্রকাশ্যে আসার পরই শুরু হয় বিতর্ক। একে একে মুখ খুলতে শুরু করেছিলেন রাজ্যের বিরোধীরা। পরে ইসলামপুরের পুলিশ ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে। তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য অভিযানও শুরু হয়। এবং সন্ধের মধ্যেই জেসিবিকে গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য, ঘটনাটি ঘটেছে গত সপ্তাহে শুক্রবার বিকেলে চোপড়ার লক্ষ্মীপুর গ্রামের দীঘলগাঁও এলাকায়। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে যুগলকে রাস্তায় ফেলে মারধর করে সেখানকার বাহুবলী তৃণমূল নেতা তাজিমুল ওরফে জেসিবি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা যায়, ওই যুবক তরুণীকে রাস্তায় ফেলে বারবার সজোরে আঘাত করছে। তরুণীর পাশে এক যুবক বসে রয়েছে। তাকেও মারধর করছে। মারধরে দুজনেই মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আর চারপাশে জড়ো হয়ে সেই দৃশ্য দেখছেন স্থানীয় মানুষজন। এই ঘটনার পরেই ব্যাপক আলোড়ন পড়ে যায় রাজ্য সহ গোটা দেশে। ঘটনার ভিডিয়ো সামনে আসতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দায় সরব হন বিরোধীরা। এদিকে, ঘটনার পর চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান অভিযুক্তের সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বল দাবি করলেও তাঁর মন্তব্যে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়।
Discussion about this post