সেলিব্রেটি সাংসদ ইউসুফ পাঠানের তাঁর নিজ কেন্দ্রে উপস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। বহরমপুরে পা রেখে জবাব দিলেন ইউসুফ। জানিয়ে দিলেন প্রতিশ্রুতি পূরণে তিনি দায়বদ্ধ।
সেলিব্রেটিরা বিধায়ক কিংবা সাংসদ পদপ্রার্থী হলে প্রথমেই একটা প্রশ্ন মনে উঁকি দেয়। বছরভর তাঁর দেখা মিলবে তো? সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের সুবিধা-অসুবিধায় তাঁকে পাশে পাওয়া যাবে তো? অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর থেকে সাংসদ পদপ্রার্থী হিসেবে লড়াই করেছিলেন ইউসুফ পাঠান। লড়ে ছিলেন কংগ্রেসের পাঁচ বারের জয়ী প্রার্থী অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে। সুদুর গুজরাত থেকে প্রার্থী করে তাঁকে উড়িয়ে আনা হয়েছিল বাংলায়। ২২ গজ থেকে সটান রাজনীতিতে রেখে ছিলেন পা। ইউসুফের সাংসদ পদ প্রার্থী হওয়ার শুরুতেই প্রশ্ন উঠেছিল অধীরের মতো হেভিওয়েটের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার স্বল্পতা নিয়ে। সমস্যায় পড়লে সাধারণ মানুষের পাশে তিনি কতটা সহজলভ্য তাই নিয়ে। বিরোধীরা তো রয়েছেই খোদ তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর প্রশ্ন তুলেছিলেন।
তাঁর দাবি ছিল এমন কাউকে প্রার্থী করা হোক যে মানুষের হয়ে কাজ করবেন, মানুষের কথা ভেবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। এমনকি প্রার্থী অসন্তোষের জেরে দল থেকে বেড়িয়ে নির্দল হিসেবেও লড়ার জল্পনাকে উস্কে দেন হুমায়ুন। সেই পরিস্থিতিতে জানা যায় দল বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ আগেও উঠেছিল হুমায়ুনের বিরুদ্ধে। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসন্তোষ প্রকাশ করে পরোক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেই আবহে লোকসভার প্রার্থী ঘোষণা, ইউসুফ পাঠানের মতো ক্রিকেট ব্যক্তিত্বকে প্রার্থী করা, হুমায়ুনের অসন্তোষে ঘৃতাহুতি দিয়েছিল। নেতা হুমায়ুনকে ঠেকাতে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিয়েছিল দল। সব ঝামেলা আপাতত দৃষ্টিতে মিটিয়ে পরে এই হুমায়ুন কবীরকেই প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের প্রচারে দেখা যায়।
ভোট মিটেছে। ভোটের ফলাফলে বহরমপুরে ‘টাইগার’কে হারিয়ে জায়ান্ট তকমা পেয়েছিলেন ইউসুফ। ৫ তারিখে অর্থাৎ ফল ঘোষণার ১ দিন পরেই গুজরাতের উদ্দেশে রওনা দেন পাঠান। এরপর আর তাঁকে বহরমপুরে দেখা যায়নি। সাংসদকে এলাকায় না পেতেই ফের ফোঁস করে ওঠেন হুমায়ুন কবীর। তাঁকে বলতে শোনা যায় ‘‘ভোট করে তাঁকে আমরা তো জিতিয়েছি। এ বার তো তাঁর নিজের এলাকায় এসে ঘোরা দরকার। তাঁর এখানে না আসার জবাবদিহি ভোটারদের কেন আমাদের দিতে হবে?’’
ভিও- বিরোধীরাও সুযোগে তাঁদের পুরনো দাবিকে ঝালিয়ে নিতে থাকেন। ভোটের আগে এলাকায় সাংসদের উপস্থিতি নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছিলেন তা সত্যি হল। এমন দাবি উঠে আসতে থাকে। সম্প্রতি বহরমপুরে ফিরেছেন ইউসুফ। বহরমপুরের মাটিতে পা রেখে বিরোধী ও দলীয় নেতাদের বিরূপ মন্তব্যের উত্তর দিলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি নিখোঁজ নই। আগেই বলেছিলাম, আমি যেমন রাজনীতিতে দায়বদ্ধ, তেমনই পরিবারের প্রতিও দায়বদ্ধ। ঠিক তেমনই খেলার প্রতিও দায়বদ্ধ। এখানকার মানুষের কাজ আটকে যেত দেব না।’’ জানা গিয়েছে পাঠান বহরমপুরে ফেরার পর তাঁর সঙ্গে কথা হয় হুমায়ুন কবীরের। তিনি জানান, অসুবিধার কথা পাঠানকে জানানো হয়েছে। তিনি সহমত। সাংসদ- পরিষেবায় যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা মাথায় রেখে ২৪ ঘণ্টার লোক নিয়োগ করা হচ্ছে।
Discussion about this post