বিরতি কাটিয়ে ১৯ জুলাই কলকাতা ফিরেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের মঞ্চে নির্ধারিত সময়েই তাঁকে দেখা গেল। চব্বিশের লোকসভা ভোটে দারুণ পারফরম্যান্সের পর আচমকাই ‘সাময়িক বিরতি’ ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একেবারে মাসখানেকের বিরতি। চিকিৎসার কারণেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত বলে প্রাথমিকভাবে অভিষেক জানিয়েছিলেন। তবে একুশে জুলাইয়ের সভামঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই ‘সাময়িক বিরতি’র পৃথক ব্যাখ্যা দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, এই বিরতিতে তিনি ব্যস্ত ছিলেন লোকসভা ভোটের ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনায়। কোথায় কেন হার, তার কাটাছেঁড়া করছিলেন একেবারে নিজের পথে। অভিষেকের কথায়, ”আমি এক মাস ছিলাম না। আমি তখন পর্যালোচনায় ছিলাম। আগামী ৩ মাসে এর ফল দেখতে পাবেন।”
এরপরই একুশের মঞ্চ থেকে সরাসরি বিজেপিকে আক্রমণ করতে ছাড়লেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ২০২৪ এর নির্বাচনে বিজেপি সন্দেশখালি তে যে চিত্রনাট্য তৈরি করেছিল সেটা বুমেরা হয়ে ফিরেছে। চিত্রনাট্যের সমস্ত চরিত্র প্রকাশ্যে চলে এসেছে। যার কারনে বিজেপি বাংলা থেকে ধুয়ে মুছে গেছে। বিজেপি নির্বাচনের সময় সন্দেশখালিতে যেভাবে মদের ফোয়ারা বসিয়েছিল তাতে হিসেব করলে দেখা যাবে প্রায় ৪০ কোটি টাকা মদ বাবদ খরচ করেছে বিজেপি। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস সাধারণ মানুষের মাথায় বাড়ির ছাদ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। বিজেপির ইডি সিবিআই এর উপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। যার কারণে মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। মানুষের কাছে তৃণমূল এর জন্য সব সময় মাথা নত করে এসেছে আগামী দিনেও মাথা নত করেই থাকবে। বিজেপি মিথ্যাচারে বিশ্বাস করে। মানুষ বিজেপির মিথ্যাচারকে ধরে ফেলেছে। যার কারনে ঢেলে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। অভিষেকের কথায়, হিসেব করলে দেখা যাবে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম দল বিজেপি। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আবাস যোজনা যে টাকা বাকি আছে তৃণমূল নিজ দায়িত্বে প্রাপকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তৃণমূল যে কথা দেয় সে কথা রাখে তিনি আবারও স্মরণ করিয়ে দেন।
দলের নেতাকর্মীদের তিনি সতর্ক করতে গিয়ে বলেন যারা দল থেকে চলে গিয়েছিলেন আবার দলে ফিরেছেন তাদের ছড়ি ঘোরাতে দেওয়া হবে না।
লোকসভা নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, যে এলাকায় তৃণমূলের ফলাফল খারাপ হয়েছে এবং সেখানে তৃণমূলের যে নেতৃত্ব ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মনে করবেন না যে তাদের রেহাই দেওয়া হবে। মানুষ তৃণমূলকে ভালবাসে তাই তৃণমূলকে ভোট দেয়। নেতাদের গাফিলতি কোনভাবে বরদাস্ত করবে না তৃণমূল। এরপরই অভিষেকের গলায় শোনা যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। একুশের মঞ্চ থেকে অভিষেক শিক্ষা দুর্নীতি ইস্যু নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তোপ দাগেন। সঙ্গে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের গ্রেফতারির দাবিতে সরব হন অভিষেক। দুর্নীতি ইস্যুতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, ‘বিজেপি আমাকে হেনস্থা করেছে, আমার বয়স্ক বাবা-মা, আমার স্ত্রী, আমার শিশু পুত্রকে হেনস্থা করেছে। কাউকে ছাড়েনি। কিন্তু আমি বলেছি গলা কেটে দিলেও ‘জয় বাংলা’ বেরোবে। নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল ইডি। নিট প্রশ্নপত্র ফাঁসের কেলেঙ্কারিতে কেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের বাড়িতে রেড করে তাঁকে গ্রেফতার করবে না কেন ইডি? এই দ্বিচারিতা কেন?’
Discussion about this post