এক নামেই আপাতত চারিদিকে শোরগোল। তিনি অর্থোপেডিক চিকিৎসক ড: সন্দীপ ঘোষ। তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর পর আর জি করের সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষকে ট্রান্সফার করা হয়েছে ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। প্রতিবাদে মুখর সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা। আদতে এই সন্দীপ ঘোষ যে দারুণ প্রভাবশালী সেই কথা এখন ফিরছে মুখে মুখে।
দিন কয়েকের হুলূস্থূলুর পর সোমবার সকালে জানা গিয়েছিল সরকারি চাকরি ছাড়তে চলেছেন আর জি করের তৎকালীন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ। তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর পর সংশ্লিষ্ট সরকারি হাসপাতালে যাবতীয় অব্যবস্থার জন্য প্রিন্সিপালকে টার্গেট করে প্রতিবাদে মুখর হয় গোটা চিকিৎসক মহল। তিনি জানান কোন চাপে পড়ে নয়, স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে চলেছেন । অধ্যক্ষ পদের পাশাপাশি সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানান। বলাবাহুল্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে বেড়িয়ে চিকিৎসক সন্দীপের রোষানলে পড়েন এক সাংবাদিকও। আর জি করে বেড়ে ওঠা ঘুঘুর বাসা ভাঙতে গিয়েই আজ তাঁর এই পরিস্থিতি। তাঁর ঠোঁটকাটা স্বভাব, শত্রুপক্ষের বাড়বাড়ন্তে ঘি ঢেলেছে।
নিজেকে যতই নিষ্পাপ দেখানোর চেষ্টা করুন না কেন সন্দীপ আদতে আর জি করের বড় ঘুঘু তিনি নিজেই। বিভিন্ন সূত্র থেকে আপাতত উঠে আসছে এমন দাবি। রাজ্যের চিকিৎসক মহলে তিনি বেশ প্রভাবশালী বলেই পরিচিত। অনেকেই বলে থাকেন ভূমিকম্প হলেও তাঁর চেয়ার নাড়ানো বেশ কঠিন। তাঁর অধ্যক্ষ পদে আসীন হওয়ার বিষয়টি খুব বেশি দিনের নয়। সন্দীপ নিজেও আর জি করের প্রাক্তনী । সন্দীপ ঘোষের উত্থান-পতনের দিকটি একবার ঝালিয়ে নেব
পরিচিতির আড়ালে কতটা প্রভাবশালী সন্দীপ?
- ২০২১ সালে প্রথম আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষের পদে যোগদান
- ২০২৩ সালে ৩১ শে মে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে অধ্যাপকের পদে বদলি
- তাঁর পরিবর্তে আর জি করে উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে আনা হয়
- অভিযোগ অধ্যক্ষের ঘরে তালা দিয়ে যান সন্দীপ
- নতুন অধ্যক্ষ দায়িত্ব নিতে পারেননি
- দুপুরেই নাটকীয় পরিবর্তন, সন্দীপকে অধ্যাপক পদে বহাল স্বাস্থ্যভবনের
- ৩ মাসের মধ্যে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ফের বদলি সন্দীপ ঘোষকে
- অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আর জি করে ফিরে আসেন সন্দীপ
বার বার বদলি সত্ত্বেও কোন এক জাদুকাঠিতে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফেরানো হয় সন্দীপ ঘোষকে। কখনও তিনি অধ্যক্ষের ঘরে তালা দিয়ে চলে যান তো কখনও তাঁকে অল্প কিছুদিনের মধ্যে ফেরানো হয়। তাঁর এই বার বার ফিরে আসা একদিকে যেমন কোন এক বিশেষ স্বার্থের দিকটি নির্দেশ করছে অন্যদিকে কার মদতে তিনি আর জি করের মতো নামী সরকারি হাসপাতালের অধ্যক্ষের পদে বহাল থেকেছেন সেই প্রশ্নও উঠে আসছে। তবে সোমবার তরুণীর বাড়িতে গিয়ে খোদ প্রিন্সিপালকে ক্লিনচিট দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ইস্তফা দিতে চাইলেও সেই ইস্তফা গৃহীত হয়নি। তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয় চিত্তরঞ্জন ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সন্দীপ ঘোষের বদলির খবর শুনে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন সেখানকার চিকিৎসকরাও। অধ্যক্ষের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Discussion about this post