টাটানগর, যা জামশেদপুর নামেও পরিচিত। অধুনা ঝাড়খণ্ডের এই শহর তৈরি করেছিলেন টাটা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা জামশেদজি টাটা। সালটা ছিল সেই ১৯০৮। দলমা পাহাড়, ডিমনা লেক, সূবর্ণরেখা নদী দিয়ে ঘেরা সুন্দর এক ছিমছাম শহর। মূলত টাটা গোষ্ঠীর ইস্পাত কারখানার আধিকারিক এবং কর্মচারীদের সুবিধার জন্যই এই শহর পত্তন করেছিলেন জামশেদজি টাটা। ভারতের সবচেয়ে আধুনিক এবং পরিকল্পিত শহর হিসেবে টাটানগর আজও সমাদৃত। এবার টাটা গোষ্ঠীর বর্তমান কর্ণধার রতন টাটা ভারতের বুকে দ্বিতীয় টাটানগর তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে ফেলেছেন। এবং তা হবে আরও আধুনিক এবং ঝাঁ চকচকে। কোথায় হচ্ছে সেই হাইটেক শহর? জানতে হলে দেখতে থাকুন এই প্রতিবেদন।
ঝাড়খণ্ডের টাটানগর বিখ্যাত তার ব্যবস্থাপণার জন্য। ঝকঝকে তকতকে রাস্তাঘাট, ২৪ ঘণ্টা পানীয় জলের সুব্যবস্থা, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, পার্ক, ব্যবসায়ীক কেন্দ্র সবই পরিকল্পনামাফিক তৈরি হয়েছে টাটানগরে। এবার দ্বিতীয় টাটানগর তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে টাটা গোষ্ঠী। শোনা যাচ্ছে সেটা হবে আরও আঘুনিক এবং হাইটেক। এমন কিছু সুযোগ-সুবিধা থাকবে নতুন এই শহরে, যা পিছনে ফেলে দেবে জামশেদপুর বা টাটানগরকেও। পুরোনো শহরের থেকেও বেশি আধুনিক হতে চলেছে।
টাটা গোষ্ঠী ভারতের অন্যতম প্রাচীন একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। ১৮৬৮ সালে জামশেদজি টাটা এই প্রতিষ্ঠানের সূচনা করেছিলেন। ইস্পাত, সিমেন্ট, অটোমোবাইল, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, কনজিউমার পণ্য, কাপড়, সবই তৈরি করে টাটা গোষ্ঠী। বলা হয়, আলপিন থেকে অ্যারোপ্লেন সবই বানায় টাটা। ২০২০ সালে টাটা গোষ্ঠীর অধীনে থাকা টাটা ইলেকট্রনিক্স ভারতে অ্যাপল সংস্থার আইফোন এসেম্বল করার বরাত পেয়েছে। তামিলনাড়ুর হোসুর শহরের অদূরে থিমিজেপল্লী নামে একটি গ্রামে এই কারখানা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি এখানে একটি আইটি হাব তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে টাটা গোষ্টীর। সবমিলিয়ে এখানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে জানা গিয়েছে। জানা যাচ্ছে, কর্মচারীদের থাকার জন্য আবাসন তৈরির জন্য থিমিজেপল্লী গ্রামের কাছেই জমি নিয়েছে টাটা গোষ্ঠী। তামিলনাড়ু সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগেই নতুন এই শহর তৈরি হচ্ছে। এই এলাকার অবস্থান বেঙ্গালুরু থেকে মাত্র ৪০ কিমি দূরে।
অ্যাপল সংস্থা সম্প্রতি চিনের উপর তাঁদের নির্ভরতা কমিয়ে ভারতেই আইফোন তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছে। সেই মোতাবেক হোসুরের কাছেই দুটি প্ল্যান্ট তৈরি হয়েছে। এই কারখানা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি ইলেকট্রনিক্স এবং আইটি হাবও তৈরি হবে। ফলে কর্মচারী এবং আধিকারিকদের জন্যই আবাসন তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে টাটা গোষ্ঠী। ১৪টি ব্লকে আধুনিক এই শহর তৈরি হবে। প্রায় ৩,০০০ ফ্ল্যাট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। যেহেতু আইফোনের মতো অত্যাধুনিক পণ্য এখানে তৈরি হচ্ছে এখানে, আইটি হাব হচ্ছে। তাই এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে তামিলনাড়ুর হোসুরে যে নতুন শহর তৈরি হচ্ছে, সেটিও হবে অত্যাধুনিক এবং ঝাঁ চকচকে। ইতিমধ্যেই টাটা গোষ্ঠী ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে এই নতুন শহর তৈরির জন্য। তবে এই শহরের নাম কি হতে চলেছে সেটা জানা যায়নি।
Discussion about this post