বারবার সুযোগ পেয়েও বাংলাদেশের বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান নিজের হাতে ক্ষমতা তুলে নেননি। এটা বিশ্ব দরবারে যথেষ্ট প্রশংসা পেলেও বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই মেনে নিতে পারছেন না। গত বছরের পাঁচ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই আনন্দে আত্মহারা হয়েছিলেন। হাসিনা স্বৈরাচারী হাসিনা একনায়িকা ছাত্র নেতাদের এ হেন প্রচারে বিভ্রান্ত বাংলাদেশের মানুষ ভেবেছিলেন তারা হয়তো এবার শান্তিতে থাকবেন। কিন্তু হাসিনা পরবর্তী সময়ে তাঁরা কি পেলেন সেটা নিয়েই এখন ক্ষুব্ধ অধিকাংশ মানুষ। কারণ, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ “মবের মুলুক”। প্রতিনিয়ত সেখানে খুন, মারধর, চুরি, ডাকাতি, নারী ও শিশু নিগ্রহ এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চলেছে। যা থামানোর কোনও লক্ষণ দেখাচ্ছে না মুহাম্মদ ইউনূসের তদারকি সরকার। ফলে তাঁরা এখন সেনা শাসন চাইছেন। কিন্তু সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান সেই পথে যেতে নারাজ। তিনি শান্তি স্থাপন করতে চান। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যে দেশের সরকার ও পৃষ্টপোষকরা এখন মধ্যযুগীয় ইসলামিক শাসনব্যবস্থার দিকে যেতে চাইছে, যে দেশে জঙ্গিরা মুক্ত হয়ে খোলা আকাশের নিচে ঘুরে বেরাচ্ছে। সেই দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা কতটা কঠিন, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন সেনাপ্রধান। তিনি এখন নিজেই স্বীকার করছেন, যে কোনও সময় বাংলাদেশে বড় ধরণের নাশকতামূলক হামলা হতে পারে। আর এই খবর এসেছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্র থেকে। কিন্তু সেনাপ্রধান কেন নিজের হাতে ক্ষমতা তুলে নিচ্ছেন না অথবা রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করছেন না সেটাই এখন মূল ভাবার বিষয়। একটি সূত্র দাবি করছে, ওয়াকার উজ জামান নিজেই একজন জামাতপন্থী। এমনকি তার পরিবারও জামায়তে ইসলামের সমর্থক। যেহেতু বর্তমান তদারকি সরকার জামাত শিবিরের তত্ত্বাবধানে চলছে সেহেতু জেনারেল ওয়াকার সরকারকে মৌন সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টা যাই হোক না কেন এই মুহূর্তে তিনি অনেকটাই শাঁখের করাতে পড়েছেন। কারণ তার উপরে সৃষ্টি হয়েছে প্রবল চাপ, একদিকে ভারত অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বিষয়টা খুলে বলা যাক, সম্প্রতি বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম এক শীর্ষ সামরিক কর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জোয়েল পি ভোয়েল। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও তিনজন মার্কিন সেনা কর্তা। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় এই মার্কিন সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেননি। তারা সাক্ষাৎ করেননি রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সঙ্গেও। তারা শুধুমাত্র বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ও অন্যান্য কয়েকজন পদস্থ সামরিক কর্মকর্তার সঙ্গে। এখন প্রশ্ন হল আচমকা কেন দক্ষিণ এশিয়ায় কর্মরত এই মার্কিন সেনাকর্তা বাংলাদেশ সফরে এলেন? বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তরফে জারি করা বিবৃতিতে যদিও বলা হয়েছে আরাকান আর্মি সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে আলোচনা এবং বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর কর্মদক্ষতা বাড়ানো নিয়েই আলোচনা হয়েছে। কিন্তু আদৌ কি তাই? খবর পাওয়া যাচ্ছে, তারা পেন্টাগন থেকে বিশেষ কোনও বার্তা নিয়ে এসেছিলেন। মূলত ইউনুসকে হটানোর নির্দেশ দিয়ে গেলেন ওই মার্কিন সেনা কর্তা। অপরদিকে যে ভারতীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে নিজের পথ বাঁচাতে সক্ষম হয়েছিলেন সেনাপ্রধান সেই ভারত চাইছে দ্রুত ইউনুসকে সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ একটি সরকার আসুক। ফলে ওয়াকার উজ জামানের কাছে ভারতেরও প্রবল চাপ রয়েছে। এখন দেখার এই দুই চাপ উপেক্ষা করার সাহস ও ক্ষমতা বাংলাদেশ সেনাপ্রধানের কতটা আছে। মুহাম্মদ ইউনূস কার্যত ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে চীন সফরে গিয়েছেন। সেখানে তিনি চিনের সঙ্গে তিস্তা নদী প্রকল্প নিয়েও প্রেসিডেন্ট শি জিংপিনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
বাইট – শফিকুল আলম, প্রেস উপদেষ্টা-বাংলাদেশ
এখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক যে একেবারেই ভালো নয় , সেটা মাথায় রাখা প্রয়োজন। অন্যদিকে মুহাম্মদ ইউনুস বেজিং গিয়ে গিয়ে তিস্তা নদী প্রকল্প, মংলা বন্দর ও লালমনিরহাট বিমানঘাঁটি নিয়ে চিনের সঙ্গে মৌ স্বাক্ষর করছে। যা ভারত কোনভাবেই মেনে নিতে পারবে না। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে ইউনূসের বেজিং সফর, চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের সঙ্গে তাঁর মাখামাখি সম্পর্ক ভারত বা আমেরিকা কেউই ভালো চোখে দেখছে না। তাই ইউনূসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কড়া নির্দেশ দিয়ে গেলেন ওই মার্কিন সেনাকর্তা। যাতে ইউনুস সাহেব বাংলাদেশ ফিরে ফের নিজের পদে বসতে না পারেন। এবং বেজিংয়ে স্বাক্ষর করে আসা মৌ নিয়ে আর বেশি দূর এগোতে না পারেন, সেটাই নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে জেনারেল ওয়াকার উজ জমানকে। এমনও হতে পারে, ২৮ মার্চের রাত বাংলাদেশের ইতিহাস নতুন করে লিখবে।
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনে নথিভুক্ত রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি বা বিএমজেপি। যার পতাকার রং ও নকশা অবিকল...
Read more
Discussion about this post