বাংলাদেশের হাসিনা বিদায়,যা দেখে পাকিস্তানের কোন কোন শহরে শুরু হয়েছিল উল্লাস, তাদের জানা উচিৎ বাংলাদেশে আজ যা ঘটছে, মাত্র ৬ মাস আগেই তাদের দেশে তা ঘটে গেছে। পাকিস্তানের নির্বাচিত সরকারের প্রধান এখন জেলে,আর বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের প্রধান এখন দেশছাড়া। বাইরে থেকে সবাই যা দেখছে আসলে ভিতরের ঘটনা তা নয়। ইমরান কোন একটি দেশকে মুখের উপর না বলেছিলেন। সেনানিবেশ করার জন্য দেশের মাটি ব্যবহার করতে দেবেন না বলে। আর হাসিনাও বলেছিলেন সেন্টমার্টিন তিনি কোন দেশকে তাদের সামরিক প্রয়োজনে দেবেন না। ছয় মাস আগে পরে দু-দেশের নির্বাচিত প্রধানদের অবস্থা একই, দু-জনেই গদিচ্যুত। আজ পাকিস্তানে চারিদিকে আন্দোলন যা জাতি দাঙ্গা বা গৃহযুদ্ধে পরিনত। কিন্তু বাংলাদেশে এখন সেই ভাবে গৃহযুদ্ধের পরিবেশ তৈরী হয়নি, তার একমাত্র কারণ সেনাপ্রধানের বিচক্ষনতা। কি সেই বিচক্ষনতা তা জানতে পুরো প্রতিবেদনটি দেখতে হবে।
গত ৫ই আগস্ট বাংলাদেশে কত অজানা ঘটনা ঘটেগিয়েছিল তা আমরা এখনও জানতে পারিনা, তবে নিশ্চিৎভাবে যত সময় যাবে ততই সেই ঘটনাগুলি আমাদের সামনে আসবে। গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা যখন বুঝে গেছেন তাকে দেশ ছাড়তেই হবে, কারণ সেনাপ্রধান বলেই দিয়েছেন তিনি আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য কোন রকম রক্ত ঝরানোর পক্ষ্যে নন। তখন শেখ হাসিনা বারবার ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন, তাকে ভারতের থেকে বিমান পাঠিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হোক, কারণ তিনি সেনাবাহীনির বিমানে করে দেশ ছাড়তে নিরপত্তার অভাব বোধ করছেন। ভারত তৎক্ষনাত আলোচনায় বসে এবং ঠিক হয়, ভারত কোনভাবেই তাকে বিমান পাঠিয়ে উদ্ধার করতে পারবে না। কারণ এতে আন্তর্জিত আইন লঙ্ঘন করা হয়। এক দেশে থেকে বিমান পাঠিয়ে অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রীকে এভাবে আনা যায় না। তাই তিনি যেন নিজের দেশের বিমানে করেই ভারতে আসেন। এই পরিস্থিতিতে হাসিনা বার বার সেনাপ্রধানকে সামরিক বিমানে করে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। সেই অল্প সময়ের মধ্যে কি করা উচিৎ তাই নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান সেনাপ্রধান। তিনি তার সহকারী অফিসারদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। কারণ তখন দেশ অগ্নিগর্ভ যে কোন মহুর্তে গনভবনে অভিযান করা হতে পারে। বিশৃঙ্খল জনতার সামনে পড়লে কি পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে তাই নিয়ে চিন্তিত সেনা প্রধান। হাসিনাও ভৃত সন্ত্রস্ত হয়ে বার বার চাপ দিচ্ছেন সেনাপ্রধানকে। শোনা যায় ভারত থেকেও হাসিনাকে নিরাপদে পাঠানোর জন্য চাপ দেওয়া হয়।
এখন সেনা যদি হাসিনাকে ভারতে নাও পাঠায়, তাহলে তো তাকে নিরাপদ আশ্রয় দিতে হবে। কারণ তাকে যদি আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হয়, তাহলে তো তাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। হাসিনাকে যদি সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়, আর হাজার হাজার জনতা যদি সেননিবাস আক্রমন করে, তাহলে তাদের মোকাবিলা করতে গিয়ে হাজার হাজার মানুষের লাশ পড়বে। আর তখন জনতা আরও ক্ষ্রিপ্ত হয়ে গেলে তাদের কে সামলাবে? অন্যদিকে হাসিনাকে গনভবন থেকে সেনানিবাসে নেওয়ার সময় যদি উত্তাল জনতার মুখোমুখি পড়ে যান, তাহলে তিনি কি তখন অক্ষত থাকবেন? আর যদি হাসিনার কিছু হয়, তখন আওয়ামীলিগের নেতা কর্মীরা তাদের নেত্রীর জন্য রাস্তায় নামবে, শুরু হবে গৃহযুদ্ধ। সেই পরিস্থিতির সামাল দেবে কে ? তো আজ যারা সেনাপ্রধানকে প্রশ্ন করছেন হাসিনা কিভাবে ভারতে চলে গেলে বা কার মদতে গেল? তারা কী সেই পরিস্থিতির সামাল দিতে পারতেন? সেনাপ্রধান তার সহকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেই হাসিনাকে নিরাপদে দেশ ছাড়তে সাহায্য করেছেন।
এবং সেটা দেশের ভালোর জন্যই । নয়তো আজ বাংলাদেশ পাকিস্তানের মত গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে যেত। তাই সেনাপ্রধানকে প্রশ্ন করার আগে তার বিচক্ষনাতাকে সম্মান করুন। আপনারা যারা আজ ক্ষমতা দখল করেছেন তারা হুজুগে কিছু একটা ঘটিয়ে দিতেই পারেন, কিন্তু তার ফল ভোগ করতে হবে দেশ এবং দেশবাসীকে, সেটাও দীর্ঘমেয়াদীতে। এই পরিস্থিতি যে বাংলাদেশ দেখছে না তা কেবল সেনাপ্রধানের জন্যই ।
Discussion about this post