বাংলাদেশের লালমনিরহাট ভারতের ‘চিকেনস নেক’ এলাকার সাথে সংযুক্ত। বাংলাদেশের এই লালমনিরহাট জেলা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার সংলগ্ন এলাকা । অর্থাৎ কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত সংবেদনশীল। এহেন পরিস্থিতিতে চিনকে এই এলাকায় বিমানঘাঁটি নির্মাণের অনুমতি দিয়ে ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ। পাল্টা অ্যাকশনে ভারত সরকার।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের চিন সফরকালীন ভারতের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে মন্তব্যের জেরেই ভারত বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করল। ইউনূস চিনকে আহ্বান করেছিলেন সেভেন সিস্টার্সে তাঁদের অর্থনীতি প্রসারিত করে বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহারের। মুহাম্মদ ইউনূসের ইঙ্গিতে একদিকে যেমন ছিল ভারতের সেভেন সিস্টার্স, অন্যদিকে তেমন রয়েছে লালমনিরহাট বিমানঘাঁটি। চিনের মাটিতে দাঁড়িয়ে তিনি চিনের প্রেসিডেন্টকে আহ্বান জানান পরিত্যাক্ত লালমনিরহাট বিমানঘাঁটিতে এয়ারবেস তৈরির। যা ভারতের কাছে একটা বড় হুমকি হতে পারে। কারণ, শিলিগুড়ি করিডোর থেকে লালমনিরহাট মাত্র দেড়শো কিলোমিটার দূরে। বলা যায় একেবারে কাছে, চিনকে আহ্বান জানাচ্ছেন মুহাম্মদ ইউনূস। লালমনিরহাটে যদি চিন নিজেদের এয়ারবেস তৈরি করে, আবার মোংলা বা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের নামে যদি সেখানেও একটি নৌঘাঁটি তৈরি করে নেয় চিন, তাহলে তা ভারতের পক্ষে খুব একটা সুখকর হবে না।
আর বাংলাদেশের এই মন্তব্যের পর ভারত নিল এক কঠোর সিদ্ধান্ত। ২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা একতরফা ভাবেই বাতিল করলো ভারত। এতে বাংলাদেশের বৈদশিক বাণিজ্য জোরদার ধাক্কা খাবে বলেই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ ইউরোপ, আমেরিকা হোক বা আরব দেশগুলিতে বাণিজ্যর জন্য বাংলাদেশ ভারতের সমুদ্র বন্দর বা বিমানবন্দর ব্যবহার করতো। বিশেষ করে কলকাতা হলদিয়া বা পারাদ্বীপ সমুদ্র বন্দর আবার কলকাতা বিমানবন্দর। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বড় বড় চালান কলকাতা বিমান বন্দরের কার্গো টার্মিনাল দিয়েই ইউরোপ আমেরিকায় পাঠাতেন সে দেশের রফতানিকারকরা। এবার তা বন্ধ হল। সেই সঙ্গে চাপে পড়ল মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বধীন বাংলাদেশের তদারকি সরকার।
বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, ভারত চিকেন নেকের সুরক্ষা আরও জোরদার করতেই এই ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্ত ভারত বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সম্পর্কে টানা পড়ে সৃষ্টি করতে পারে।
Discussion about this post