অশান্ত বাংলাদেশ। হিন্দুদের ওপর লাগামছাড়া অত্যাচার চলছে।প্রথমে ভারতকে ততটা গুরুত্ব দিতে চায়নি ইউনুস সরকার। তাই, দেশবাসীর মুখে অন্ন তুলে দিতে চাল, ডাল কিংবা অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে ভারতের বিকল্প খুঁজতে শুরু করে। চিন, পাকিস্তান কিংবা তুরস্ক থেকে চাল কিংবা পেঁয়াজ কেনা হবে বলে চিন্তাভাবনা শুরু করে ইউনূস। কিন্তু তা যে সম্ভব নয় তা কয়েকদিনের মধ্যে তারা বুঝে যায়। অবশেষে, শত্রু চিহ্নিত করা ভারতের কাছে হাত পাততে হল ইউনূসকে।
গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এক অস্বস্তিকর সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। দেশকে ‘উন্নয়নে বিশ্বের রোল মডেল’ হিসেবে দেখানোর যে বয়ান ছিল, তা যে অনেকটাই ফাঁপা ছিল, সেটা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। মূল্যস্ফীতির কারণে একদিকে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ, অন্যদিকে চাকরির যথেষ্ঠ সুযোগ নেই। দেড় দশক ধরে চলা অর্থ পাচার দেশের অর্থনীতিকেই এখন ভঙ্গুর অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে। ফলে নতুন বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ কাটছে না।
উল্লেখ্য, অর্থনীতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছরের শেষ দিন রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবির ট্রাক থেকে বিক্রি হচ্ছিল কয়েক ধরনের পণ্য। দুপুর ১২টা নাগাদ পণ্য কমে এলেও লাইনে দাঁড়ানো মানুষের সংখ্যা বাড়ছিল। সারির শেষের দিকে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা জানেন না শেষ পর্যন্ত তাঁদের জন্য কিছু থাকবে কি না। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট মানুষের কিছুটা সাশ্রয়ী দামে পণ্য কেনার এই চেষ্টা ২০২৪ সালের সাধারণ চিত্র। নতুন বছরে সরকার পণ্যমূল্যের রাশ টেনে ধরতে কী ব্যবস্থা নেয়, সেদিকে তাকিয়ে থাকবেন এসব মানুষ।
বিদায়ী বছরটি শুরু হয়েছিল সংকটের মধ্যে, তবে আশাবাদও ছিল। কিন্তু যাকে অলিগার্কি বলে চিহ্নিত করেছেন অর্থনীতিবিদেরা, সেই ব্যবস্থার মধ্যে দেশ তলিয়ে যাওয়ার পর সংকট আর চাপ থেকে বের হতে পারেনি অর্থনীতি। ব্যাংক দখল, অর্থ পাচার, ঋণখেলাপি তোষণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ধস, প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ দিয়ে অর্থ লোপাট—ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এগুলো নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের কাঁধে এখন দায়িত্ব অর্থনীতির ক্ষত সারানোর, নতুন করে আবার শুরু করার।
উল্লেখ্য, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যর নেতৃত্বে যে শ্বেতপত্র কমিটি গঠন করা হয়, সেই প্রতিবেদনের অর্থনৈতিক সারমর্ম হচ্ছে, দেশে একটি ‘চোরতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, যারা দেড় দশক ধরে লুটপাট করেছে। কমিটির হিসাবে এ সময় কেবল বিদেশেই পাচার হয়েছে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বা ২৮ লাখ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত,সবার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে আবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তাঁর চিন্তা অত্যন্ত সংরক্ষণবাদী। হুমকি দিয়ে রেখেছেন, আমদানি করা পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক বসাবেন। তবে চীন কিংবা মেক্সিকোর মতো দেশের পণ্যে শুল্ক বসবে আরও উঁচু হারে। এ হুমকি বাস্তবে রূপ পেলে তা বাংলাদেশের জন্য সুযোগও বয়ে আনতে পারে। চীনের পণ্যে উচ্চ শুল্ক বসলে সে দেশ থেকে শিল্প অন্য দেশে যাবে। বাংলাদেশকে সেই সুযোগ গ্রহণ করতে হলে ব্যবসা সহজ করা, বন্দর আধুনিকায়ন ও বিনিয়োগপ্রক্রিয়া মসৃণ করতে হবে।
Discussion about this post