বহু প্রতীক্ষার পর প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক হল বিএনপির। এই বৈঠকটির দিকে তাকিয়ে ছিল অনেকেই। শেষমেষ হয়ে গেল সেই বৈঠক। প্রায় দু ঘণ্টা এই বৈঠকে কি কি আলোচনা হল? নির্বাচন নিয়ে কি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? যেটা নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন বহু প্রতীক্ষিত মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকটি ব্যর্থ হয়েছে। শুধু আলোচনায় হল। কিন্তু নির্বাচন অনিশ্চিত। জানা যাচ্ছে, বৈঠকে বিএনপি ইউনূসের কাছে একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ চেয়েছিল। কিন্তু ড. ইউনূস বরাবরের মতো নির্বাচন নিয়ে বলেছেন, এই বছরের শেষে কিংবা পরের বছরের জুনে মধ্যে। বিএনপির নেতারা বৈঠকে স্পষ্ট করে মোহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছেন, এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চান তারা। প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন, যা বিএনপি মেনে নেয়নি বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। আর এখানেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচন কোনও মতেই চাইছেন না প্রধান উপদেষ্টা। তার প্রস্থান বলে কিছু নেই। তিনি ক্ষমতার স্বাদ পেতেই এর অলিন্দে থেকে যেতে চান। এইদিন সরকারি বাসভবন যমুনায় বৈঠকটির পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি খানিকটা অসন্তোষ প্রকাশ করে বুঝিয়ে দেন, এই বৈঠকে তারা সন্তুষ্ট নন। তারা পরবর্তীতে দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত নেবেন যে কি করণীয়।
ছাত্রনেতারা চাইছে, পুরোপুরিভাবে সংস্কার করে নির্বাচন করতে। বোধ হয় প্রধান উপদেষ্টাও তাই চাইছেন। আর সেই কারণেই নির্বাচন নিয়ে এত গড়িমসি। তবে বিএনপির মত শক্তিশালী দল সরকারের উপরে আরও প্রবল চাপ সৃষ্টি করা উচিত, মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে সেনাপ্রধানের লাগাম টানা উচিত বলেও মনে করা হচ্ছে। যদিও এখন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান সেনাবাহিনীকে রাস্তায় নামিয়েছেন। চাইছেন আইন শৃঙ্খলা আয়ত্তে আনতে। সেই লক্ষ্যে তিনি সফলও হচ্ছেন। কিন্তু স্থায়ী সরকার গঠিত না হলে দেশ আয়ত্তে ফিরবে না। এটা বোঝেন সেনাপ্রধানও। তাই বিভিন্ন সময়ে তার মুখে শোনা গিয়েছে নির্বাচন প্রসঙ্গ। কিন্তু সরকারকে সরাসরি তিনি চাপ দিতে পারেন না। আর সেই কারণেই ছাত্রনেতাদের কথায় ইউনুস গড়িমসি করছেন নির্বাচন নিয়ে। তাই বিএনপি চেয়েছিল অন্তত সরকারের প্রধানের সঙ্গে কথা বলে মনোভাব টা বুঝতে, এবং তাদের মতামত দিতে। সেটাই করল বিএনপি। এমনকি বিএনপি জানে, এখন নির্বাচন হলে তাদের জেতার সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেই বৈঠক কার্যত ব্যর্থ বলা যায়। এখন দেখার, এই বৈঠকের পর কি একশন নেয় বিএনপি।
Discussion about this post