পাকিস্তানের বিমান হামলার প্রতিশোধ নিল তালিবান। শনিবার সে দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েক দফা হামলা চালিয়েছে তালিবান যোদ্ধারা। হামলায় নিহত পাক সেনার ১৯ সদস্য। আহত অনেকেই। এই হামলা প্রসঙ্গে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফে বিবৃতি জারি করে কি জানানো হল, বিস্তারিত জানাবো এই প্রতিবেদনে।
বিমান হামলার প্রতিশোধে সক্রিয় আফগানিস্তানের তালিবান গোষ্ঠী।পাকিস্তানে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালালো তালিবান। এই হামলার পরেই একটি বিবৃতি জারি করে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। পাকিস্তানে হামলা চালানোর বিষয়টি স্পষ্ট করে না জানালেও, তারা জানিয়েছেন শনিবার তালিবান যোদ্ধারা হাইপোথেটিক্যাল লাইন এর বিপরীতে থাকা বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ সীমান্ত বোঝাতে আফগান সরকার মূলত এই হাইপাথেটিক্যাল লাইন শব্দটি ব্যবহার করেন। বিবৃতে আরও জানানো হয়, বিভিন্ন ক্ষতিকর গোষ্ঠী ও তাদের সমর্থকেরা কয়েকদিন আগে আফগানিস্তানে হামলা চালায়। এসব গোষ্ঠীর আস্তানা ও বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে আফগানিস্তানের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল থেকে তালিবান যোদ্ধারা হামলা চালিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানকে উদ্দেশ্য করে এই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে কিনা সেই প্রশ্নের উত্তরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এন আই তুল্যা খোওয়ারাজমি বলেন, যে স্থানে হামলা চালানো হয়েছে সেটাকে আমরা পাকিস্তানের এলাকা বলে বিবেচনা করিনা। তবে এটা বলতে পারি যে হাইপাথেটিক্যাল লাইন এর বিপরীতে থাকা বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে।
আবার বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ব্রিটিশদের তৈরি করা ডুরান্ড সীমান্ত নিয়ে দু’দেশের দ্বন্দ্ব বহু পুরনো। একে অপরের ভূখণ্ডকে স্বীকৃতি দিতে চায় না দু’দেশই। ওই বিবৃতিতেও সেই দ্বন্দ্বের ইঙ্গিতই দিয়েছেন আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার আফগানিস্তানের দক্ষিণাংশের পাকতিকা প্রদেশে আকাশ পথে হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তানের বায়ুসেনা। পাক বাহিনীর ড্রোন হামলায় অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলে দাবি করেছিল তালিবান প্রশাসন। মূলত তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান গোষ্ঠীর ঘাঁটি এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলি তাদের নিশানায় ছিল। পাকিস্তানি প্রশাসন মূলত জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে নিশানা করার কথা বললেও আফগানিস্তান সরকার কিন্তু সেই দাবি উড়িয়ে পাল্টা জানিয়েছিল, সে দিনের ওই বোমাবর্ষণে নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন নারী এবং শিশু। তালিবানি হামলার পরে পাক সেনাবাহিনী আফগান সীমান্তে ফের অভিযান শুরু করে বেশ কয়েকটি চেক পোস্ট দখল করে নিয়েছে বলে দাবি পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশের।
পাকিস্তানের শাহবাজ শরিফ সরকার বারবার অভিযোগ করেছে, তাদের দেশে অশান্তি আর সন্ত্রাস ছড়ানোর পিছনে রয়েছে তালিবান মদতপুষ্ট এই জঙ্গি গোষ্ঠীরই হাত। অবিলম্বে সন্ত্রাসে মদত দেওয়া বন্ধ না করলে তার ফল ভুগতে হবে বলে তালিবান প্রশাসনকে সম্প্রতি হুমকি দিতেও শোনা গিয়েছে পাক প্রধানমন্ত্রীকে।
প্রসঙ্গত, পাক বিমান হামলার ঠিক চার দিনের মাথায় পাল্টা পাক সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় হামলা চালাল আফগান সরকার। তারা উল্টে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ এনেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে।
ফলে বোঝাই যাচ্ছে পরিস্থিতি আস্তে আস্তে আরও কঠিন রূপ ধারণ করতে চলেছে।
Discussion about this post