হঠাৎই বঙ্গভবনে উপস্থিত হন বাংলাদেশের তিন বাহিনীর প্রধান। দেখা করেছেন রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সঙ্গে। সূত্র বলছে, ড. ইউনুস সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের বরখাস্তের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে যে চিঠিটি পাঠিয়েছিলেন, সেটি এই তিন জন গিয়ে বাতিল করে দিয়েছে। অর্থাৎ আপাতভাবে মহম্মদ ইউনূসের পরিকল্পনা শেষ হয়ে গেল। জানা যাচ্ছে, বঙ্গভবনে এই বৈঠকের পর সেনা প্রহরা আরও জোরদার করা হয়েছে।
এর আগে বহুবার দেখা গিয়েছে, রাষ্ট্রপতি এবং সেনাপ্রধানের মধ্যে এক ধরনের যোগাযোগ রয়েছে। যখনই রাষ্ট্রপতি বা সেনাপ্রধান সমস্যার মধ্যে পড়েন, তখন পারস্পরিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। শোনা যাচ্ছে, সেনা নিবাসে সেনাপ্রধান সেনাবাহিনীকে হাই আলার্টে রেখেছেন। তবে কি সত্যিই আরও বড় কিছু ঘটতে চলেছে? যদি এই সব ঘটনা সত্যি হয় থাকে, তবে এইবারের মতো সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার রক্ষা পেলেন। তবে ভবিষ্যতে তার জন্য কি অন্য কোনও কিছু অপেক্ষা করছে? উঠছে প্রশ্ন।
অনেকে আবার বলছেন, সামরিক ক্যু ঘটনার জন্য বঙ্গভবনে সেনা সমাবেশের চেষ্টা করছিলেন সেনাপ্রধান ওয়াকার। আসলে একটি ধারণা তৈরি হয়েছে, যে সেনাপ্রধান শেখ হাসিনার আমলের নিয়োগকর্তা। তিনি কিছুটা হাসিনাপন্থী বলেও কথিত রয়েছে দেশের অন্দরে। তাই আওয়ামী লীগের কার্যকলাপ নিষিদ্ধ হতে তিনি যে কোনও ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারেন। ওই কারণেই তাকে সরিয়ে ফেলা প্রয়োজন। এই ধারণা যত দিন যাচ্ছে আরও বেশি করে প্রকট হয়ে উঠছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে। আর সেই কারণেই সামরিক ক্যু ঘটনার জন্যই তিনি পদক্ষেপ করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কিছু জুনিয়র কর্মকর্তার জন্য তিনি সেই পদক্ষেপ থেকে সরে আসেন। আবার কেউ বলছেন, তাকে বরখাস্ত করার যাবতীয় কর্মকাণ্ড হাতে নেওয়া হয়েছিল। সেইভাবে সরকারের প্রস্তুতি ছিল। প্রস্তুতির অংশ হিসাবে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে একটি চিঠি নাকি রাষ্ট্রপতির দফতরে গিয়েছে। যেটা সেনাপ্রধানকে অপসারণ করার জন্য, এবং তাতে যেন রাষ্ট্রপতি সই করে। আর বিষয়টি যখন সেনাপ্রধান জানতে পারলেন, তখন বিমান বাহিনীর প্রধান এবং নৌ বাহিনীর প্রধান সহ আরও কিছু সামরিক কর্মকর্তা বঙ্গভবনে যান। একসময় সেনাপ্রধান নিজেই তাদের সঙ্গে যুক্ত হন। শোনা যায়, সেখানে উপস্থিত হয়ে তারা রাষ্ট্রপতিকে আবেদন করেন। এবং তারা সফল হন। তবে যেভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বদল আসছে, তাতে যে কোনও দিন যা কিছু ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনিতেই কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ করার জন্য শাস্ত্র নেতারা মোহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন ঘেরাও করেছিল। তারপর দেখা গেল আওয়ামী লীগের কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে কিছুদিন আগে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির অপসারণে বিক্ষোভ দেখা গেছে। এবার কি সত্যিই রাষ্ট্রপতি এবং সেনাপ্রধান পরবর্তী নজরে? তার জন্যই কি এবার সচেষ্ট হচ্ছেন ইউনুস? যদিও এখনকার মত সেনাপ্রধানের বিষয়টি আটকানো গেল। কিন্তু যদি কোন ভাবে ছাত্রনেতা বা আরো কোন বড় জোটের চাপে বা পরিকল্পনায় সেনাপ্রধান বা রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ করা হয়, তবে বাংলাদেশে বড় কোন বিশৃঙ্খলা তৈরি হবেই। বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
Discussion about this post