ধাক্কার পর ধাক্কা। আওয়ামী লীগের কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এর তরফে। এবার শেখ হাসিনার দলের রেজিস্ট্রেশন স্থগিত রাখল নির্বাচন কমিশন। সোমবার রাতেই নির্বাচন কমিশনের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর। অর্থাৎ পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে আওয়ামী লীগের সমস্ত কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিল। জানা যাচ্ছে, সোমবার রাতেই সিদ্ধান্তের কথা জানান নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ। তিনি জানান, আওয়ামী লীগের সমস্ত কার্যকলাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এরপরই তাদের রেজিস্ট্রেশন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, দেশে নির্বাচনে লড়তে গেলে সেই দলটিকে রেজিস্ট্রেশন করাতে হয় নির্বাচন কমিশনে। এখানেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাই সরকার গঠনের জন্য নির্বাচন হলে তবে কি শেখ হাসিনার দল সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না? কি হবে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ?
উল্লেখ্য, ২০২৪ এর ৫ই অগাষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবী উঠে আসছিল। গত কয়েকদিনে তা আরও জোরালো হয়। গত তিনদিন ধরে জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং বাংলাদেশের অন্যান্য দলের নেতারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ দাবিতে শোরগোল ফেলে দেয় বাংলাদেশ জুড়ে। এই দাবিকে কেন্দ্র করে শুক্রবার থেকে কর্মসূচি ও নেওয়া হয়। ‘শাহবাগ ব্লকেড’ নামে ওই কর্মসূচিতে হৈচৈ করে যাই বাংলাদেশে। এমনকি প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুসের বাসভবনে বিক্ষোভ শুরু করে কিছু ছাত্রনেতা। তারপরই বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিষয়টিকে অতি গুরুত্ব আকারে দেখা হচ্ছে বর্তমান সরকারের তরফে, সেটা আগেই বোঝা গিয়েছিল। তবে আন্দোলনের তীব্রতা বাড়তেই তড়িঘড়ি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা। বৈঠক শেষ হওয়ার পরেই তদারকি সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেন, আওয়ামী লীগের কার্যকলাপকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে। তিনি জানান, শনিবার বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যেকোনো রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবেন। এমনটাই জানিয়ে একটি বিবৃতি জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার। জানানো হয়, সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং আপামর বাংলাদেশের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য, এবং জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্বে নিরাপত্তা এবং অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যদিও শেখ হাসিনা নাকি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, মোহাম্মদ ইউনুস কেউ নয় সেই দলকে নিষিদ্ধ করতে পারে। তাদের সমস্ত সিদ্ধান্ত অবৈধ বলে জানান শেখ হাসিনা। তবে এখন দেখার, শেষমেশ আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার দল অর্থাৎ আওয়ামীলীগ অংশগ্রহণ করতে পারে কিনা!
Discussion about this post