বাংলাদেশে বহুবার সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে। এবারও কি বাংলদেশে সেনা ক্ষমতা নিতে যাচ্ছে? এরকম একটি গুঞ্জন বাংলাদেশের অন্দরে শোনা যাচ্ছে। বুধবার সেনা সদরে একটি বৈঠক হয়ে নাকি এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের এক পক্ষ বলছে, সেনাসদরে আলোচিত হতে পারে, করিডোর নিয়ে। অর্থাৎ সেনাপ্রধান সামরিক কর্তাদের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করতে পারেন। আবার এক পক্ষ বলছে, দেশের অস্থির পরিস্থিতির মাঝে সেনাবাহিনী দেশের ক্ষমতা হাতে তুলে নিতে পারে। এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত ঘিরে নানা মহলে জল্পনা তুঙ্গে।
এদিকে বাংলদেশে প্রধান উপদেষ্টা এবং সেনাপ্রধানের মধ্যে একটি দূরত্ব হয়েছে, সেটা স্পষ্ট। শুধু তাই নয়, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত তৈরি হচ্ছে, সেটাও বিভিন্ন সময় সামনে এসেছে। সম্প্রতি শোনা যায়, ১১ ই মে মোঃ ইউনুস চুপিসারে পৌঁছে যান রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর দরবারে। সেখানে গিয়েই মহম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানকে সরিয়ে দেওয়ার একটি প্রস্তাব নিয়ে আসেন। এমনকি একটি চিঠিও দেওয়া হয় রাষ্ট্রপতিকে। আর সেই চিঠি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান দেখা করতে যান বলে খবর। আর সেখানেই আলোচিত হয়, দেশের মানুষ এখনও সেনাবাহিনীর ওপরই আস্থা রাখছে। আর তারপরই আলোচনা করে ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া যায়। আর এরপরই চুপ করে বসে নেই সেনাপ্রধান ওয়াকার। তিনি সেনা সদরে একটি বৈঠক ডেকেছেন। মূলত বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির পিছনে বাংলাদেশ সরকারের ব্যর্থতা নিয়েই আলোচনা হবে। এর পাশাপাশি বৈদেশিক শক্তি বাংলাদেশকে যে চালনা করছে, সেটার বিষয়ে জানেন সেনাপ্রধান। সেই বিষয় নিয়েই আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। মূলত সেনাপ্রধানের মধ্যে দুটি বিষয় নিয়ে উদ্বেগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রথমত তার লক্ষ্য, বাংলাদেশে ইনক্লুসিভ নির্বাচন করা। যাতে যত দ্রুত সম্ভব গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ স্থায়ী সরকার গঠন করার। আরেকটি বিষয় নিয়েও উদ্বেগে রয়েছেন সেনাপ্রধান। তাকে যেকোনো মুহূর্তে সরিয়ে ফেলা হতে পারে। সেটা আন্দাজ করতে পারছেন তিনি নিজেও। কিছুদিন আগেই তাকে সরানোর জন্য ছক কষা হয়েছিল। তবে আগে থেকে বুঝতে পেরে সেটা ঠেকানো গিয়েছে। আসলে প্রথম থেকে ছাত্রনেতারা বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে মনোভাব পোষণ করেন, সেটা এর আগে বহুবার প্রকাশিত হয়েছে। শেখ হাসিনার জমানার শেষ হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই ছাত্র নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছিলেন, শেখ হাসিনাকে যারা নিরাপদ করিডর দিয়েছিল, তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। অর্থাৎ সেনাপ্রধানের যে শেখ হাসিনাকে সুষ্ঠুভাবে ভারতে পাঠিয়েছিলেন, সেটারই ইঙ্গিত করেছিলেন এই ছাত্রনেতা। এর পাশাপাশি প্রবল ভাবে আলোচনা সম্ভাবনা করিডোর নিয়ে। যেটা বাংলাদেশের জন্য আগামী দিনে একটি হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তবে এই বৈঠকটির ঠেকানোর জন্য সরকারের তরফ থেকে নানা রকম চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও খবর বাংলাদেশের গোপন সূত্রে। তবে কি কি বৈঠকে শেষমেশ উঠে আসতে চলেছে সেদিকে যেমন প্রত্যেকের নজর রয়েছে, তেমন অন্যদিকে সেনাপ্রধান সত্যিই শেষমেশ কোনও বড় সিদ্ধান্ত নেন কিনা, সেটাই দেখার।
Discussion about this post