বড় সিদ্ধান্ত মহাম্মদ ইউনুসের! চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশে হস্তান্তরে উদ্যত বাংলাদেশ সরকার। বুধবার চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘যারা বন্দরের ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ, পৃথিবীর সেরা যারা, তাদের দিয়ে এই কাজ করাতে হবে, যেভাবেই হোক। কিন্তু কেন এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিলেন মোহাম্মদ ইউনুস? এই সিদ্ধান্ত কি সত্যিই কার্যকর হবে নাকি এটি দেশের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত? উঠছে প্রশ্ন।
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি কোম্পানিকে লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তরবর্তী কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। বুধবার চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিদর্শনে গিয়ে এক অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘যারা বন্দরের ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ, পৃথিবীর সেরা যারা, তাদের দিয়ে এই কাজ করাতে হবে, যেভাবেই হোক। মানুষ যদি রাজি না হয়, জোরাজুরি নয়, তাদের সম্মতি আদায় করেই করতে হবে। কারণ, এটা এমন একটি বিষয়, যেটি সেশন করলে ওদিকে সমর্থন না করার কোনও কারণ নেই।’
এদিন চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে গিয়ে কি কি বললেন প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস শুনুন,,
পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্ট ভাবে বলেন, ‘আমার চিন্তার কারণ একটাই, দেশের অর্থনীতি যদি বদলাতে হয়, তাহলে চট্টগ্রাম বন্দরই হলো প্রধান ভরসা। এটাকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি, নতুন কোনও অধ্যায়ে প্রবেশ করার কোনো সুযোগ নেই। এই পথ খুলে দিলে বাংলাদেশের অর্থনীতির পথ খুলে যাবে। এই পথ না খুললে বাংলাদেশের অর্থনীতির সার্বিক বিস্তারের জন্য যতই পরিকল্পনা করা হোক না কেন, কোনটাই কাজে আসবে না।’
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরদের দিয়ে পরিচালনার প্রক্রিয়া চলছে। আওয়ামী লীগ আমলে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর মধ্যে লালদিয়ার চর ও বে টার্মিনালে অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতি খাতে পুরো বিনিয়োগ করতে হবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে। তবে নিউমুরিং টার্মিনালে পুরোদমে চালু থাকায় এই টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়া নিয়ে স্থানীয় শ্রমিক ও অপারেটররা আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যের শুরুতে বিদেশি অপারেটরদের পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার প্রসঙ্গটি টেনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি নৌপরিবহন উপদেষ্টাকে জানিয়েছি, আমি আর শুনতে চাই না, অমুক তারিখের মধ্যে সব দিয়ে দিতে হবে। যারা বন্দরের ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ, পৃথিবীর সেরা যারা, তাদের দিয়ে এই কাজ করাতে হবে, যেভাবেই হোক।
উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টার এই সিদ্ধান্তের পরই ১২ দলীয় জোটের নেতাদের তরফে জানানো হয়, যেকোনো মূল্যে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল দেশি প্রতিষ্ঠানের হাতেই থাকতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি কোম্পানিকে লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হবে দেশের জন্য আত্মঘাতী। নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা বলে জাতীয় অর্থনীতির প্রধান ‘লাইফ লাইন’ চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না।
জোটের নেতারা আরও বলেন, নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত প্রধান সমুদ্রবন্দর বিদেশি কোম্পানির তত্ত্বাবধানে দেওয়ার তৎপরতা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। এত বড় জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত এককভাবে নেওয়ার কোনো এখতিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। অর্থাৎ মহম্মদ ইউনুসের এই সিদ্ধান্তকে এখন মানতে নারাজ বিভিন্ন নেতৃত্ব।
Discussion about this post