শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি প্রথম থেকেই ‘সন্তুষ্ট’ ছিল না আমেরিকা। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বারংবার বিবৃতিও দিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন। সেই আমেরিকাই পালা বদলের পর মহম্মদ ইউনুসকে স্বাগত জানিয়েছিল। তাঁর সরকারকে সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিল আমেরিকা। অপরদিকে ইউনুসও বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে ইউনুসের সরকারের ১০০ দিনে পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হয়েছে সেখানে। এই আবহে এবার বাংলাদেশ নিয়ে মুখ খুলল আমেরিকা। স্পষ্ট জানিয়ে দিল, সরকারের দমনমূলক নীতিকে কোনও মতেই সমর্থম করে না তারা। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টকে এবিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল বাংলাদেশ নিয়ে। সেখানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর অত্যাচার এবং আন্দোলনকারীদের দমনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল মার্কিন আধিকারিককে। সেই সময়ই মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে যদি সরকারি মদতে দমন করা হয়, তাহলে তা কোনও ভাবেই সমর্থন করবে না আমেরিকা। এই আবহে প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারকে নমনীয় হতে আবেদন জানানো হয়েছে। ডিপার্টমেন্টের মতে, ‘বাংলাদেশ সরকারকে আমরা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছি, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারকে আমরা সমর্থন করি। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের দমন করা কোনও সরকারেরই উচিত নয়।’ এদিকে শেখ হাসিনার প্রতি ভারতের অন্ধ সমর্থন এখনো বহাল। দিল্লি কোনদিক না দেখে গত ১৫ বছর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের শাসনেই ভরসা রেখেছে। হাসিনার শাসনামলে নানা ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন ছিল গণতান্ত্রিক বিশ্বে। শেখ হাসিনার ‘পক্ষে’ আমেরিকাকে দেওয়া ভারতের বার্তা বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের’ পক্ষে আমেরিকা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপর যে চাপ তৈরি করেছে তাতে ভারত এতোদিন পর্যন্ত কার্যত দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে ভারত মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছে।এদিকে ভারতের বার্তা নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যত সন্তুষ্ট। দলের সাধারণ ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে সেটি ফুটেও উঠেছে। অন্যদিকে খুশি নয় বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তবে দু’দেশের সম্পর্ক তিক্ততার চরমে পৌঁছেছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মহাম্মদ তৌহিদ হোসেনের বক্তব্যও ভালোভাবে নিচ্ছে না ভারত। তারা নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে ঢাকায় ভিসা কার্যক্রম শিথিল রেখেছে। এতে অনেক বাংলাদেশি জরুরি চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ভারতের ঋণে বাংলাদেশে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। কর্মীরা কাজে যোগদানে অনীহা দেখাচ্ছেন। যদিও এ নিয়ে দিল্লিকে দফায় দফায় অনুরোধ করে চলেছে ঢাকা। চলতি বছরের শুরুতেই বাংলাদেশ ইস্যুতে কথা হয়েছিল ভারত-আমেরিকার। নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পরিস্থিতি নিয়ে সুর চড়িয়েছিল ওয়াশিংটন। বাংলাদেশ পুলিশের একটি অংশের উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। পড়শি দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে সাম্প্রতিককালে। পূর্ববর্তী সরকারের পতনের পর শুরু হওয়া দাঙ্গায় অনেক হিন্দুদের দোকানপাট, বাড়িঘর এবং মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছিল। আওয়ামি লিগের দুই হিন্দু নেতা সহ বহু হিন্দুদের খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এছাড়াও হিন্দুদের জোর করে ধর্মান্তকরণের অভিযোগও ওঠে। উচ্চপদস্থ হিন্দু আমলা এবং পুলিশদের জোর করে পদত্যাগ করানো হয়। বহু হিন্দু শিক্ষককেও জোর করে পদত্যাগ করানো হয়। দুর্গাপুজোর সময় জায়গায় জায়গায় প্রতিমা ভাঙার ঘটনা ঘটেছিল বলেও অভিযোগ উঠেছিল। এরই মাঝে নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে চট্টগ্রাম সহ বাংলাদেশের অনেক জায়গাতেই হিন্দুরা বিশাল মিছিল ও জমায়েত করে।
পৌষেও বৃষ্টির ভ্রুকুটি! সপ্তাহান্তে বৃষ্টির সম্ভাবনা বাংলায়। পার্বত্য এলাকায় তুষারপাতের সম্ভাবনাও জারি। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার পরোক্ষ প্রভাবে এই বৃষ্টি ও তুষারপাত।...
Read more
Discussion about this post