গ্রেপ্তার হতে পারেন কুনাল ঘোষ! বেশ কিছুদিন আগেই বিকাশ সাহায্য ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য আইনজীবীদের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগে তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ সহ মোট আটজন এর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করলো হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এবং আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ঘটনায় আদালত অবমাননার রুল জারি করল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের বৃহত্তর বেঞ্চ জানায়, সকল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হল। ফলে রুল জারি হল তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ এবং উচ্চ প্রাথমিকের বিক্ষোভকারী সাত জন চাকরিপ্রার্থীর বিরুদ্ধে।
এদিন তিন বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, আদালত অবমাননার নোটিস পেলে ১৫ দিনের মধ্যে তার জবাব দেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু তার পরেও কোনও পক্ষের হলফনামা জমা পড়েনি আদালতে।বিচারপতির তরফে স্পষ্ট বার্তা , হলফনামা জমা দেওয়ার বিষয়ে বিলম্ব হওয়ার কারণ না জানতে চেয়ে সবার বিরুদ্ধে রুল জারি করেছে আদালত। তবে এই মুহূর্তেই কাউকে জেলে পাঠানো হচ্ছে না । অর্থাৎ রুল জারি করার অর্থ হল, অভিযুক্তকে আদালতে সশরীরে হাজিরা দিয়ে জানাতে হবে, কেন তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ বা গ্রেফতার করবে না আদালত।
অর্থাৎ আদালতের এই রুল বহাল থাকল কুনাল ঘোষ সহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে।
হাই কোর্টে শুনানিতে মামলা চলাকালীন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের আইনজীবীর দাবী, ঘটনার দিন তাঁর মক্কেল সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। সে দিন রাজারহাটে একটি বেসরকারি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন তিনি। এরপর তিন বিচারপতি ছেড়ে ওঠার আগে জানিয়ে দেন,আগামী ১৬ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
এদিন শুনানি শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ তার বিরুদ্ধে আদালতের রুল জারির প্রসঙ্গে জানান,” বিচারব্যবস্থাই এখন শেষ ভরসা। বিচার ব্যবস্থা রয়েছে বলে সমাজ টিকে আছে। তাঁর জীবনেও নানা ভাবে আদালত জড়িয়ে রয়েছে।” পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘বিচারপতিদের শ্রদ্ধা করি। আমি আস্থা রাখছি, তিন বিচারপতির বেঞ্চ গোটা বিষয়টি বুঝতে পারবেন।’’
গত শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের চেম্বারের বাইরে বিক্ষোভ দেখান উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য এবং স্লোগান তুলে বিক্ষোভকারীদের একাংশ এমনটাই অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলা করতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা চালায় বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীদের একাংশ । এরপর এই ঘটনা আদালতের সামনে আসলেপ্রধান বিচারপতির বেঞ্চ গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। এরপরই আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ । শুধু তাই নয়, বিচারপতি বসুর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে, এরপর তার বিরুদ্ধেও আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। অর্থাৎ ওই মামলায় কুণাল ঘোষ ছাড়াও নাম রয়েছে উচ্চ প্রাথমিকের সাতজন চাকরিপ্রার্থীর নাম। এবং এই মামলা জারির পর আদালতের তরফে অভিযুক্তদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতি। কিন্তু সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ সহ বাকি চাকরিপ্রার্থীদের হলফনামা জমা পড়েনি হাইকোর্টে। এরপরে আদালতের পর্যবেক্ষণ অভিযুক্ত সকলের বিরুদ্ধে রুল জারি করা হল হাইকোর্টের তরফে। এবং এ মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৬ই জুন।
Discussion about this post