সম্প্রতি ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জল শংকর তিনি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেছেন। আর এরপর থেকেই বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম বলছে ভারত হঠাৎ করে কেন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করল। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনাও।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিদেশমন্ত্রী এস জয় শংকর বাংলাদেশের নির্বাচন সংক্রান্ত মন্তব্যের পরই একটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে ভারত বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে। অনেক কূটনীতিবিদ আবার এই বিষয়টিকে রাজনৈতিক চাপ হিসেবেও দেখছে। কারণ মোহাম্মদ ইউনুস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যে সমস্ত দুর্নীতি করে চলেছে এবং ক্ষমতার টিকে থাকার জন্য সে দেশের নির্বাচন টিকে যেভাবে পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং সংস্কারের নামে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ মানুষকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখছে শুধুমাত্র নিজের ক্ষমতার সিংহাসনটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সেই বিষয়টি আন্তর্জাতিক দেশগুলি কখনোই মেনে নেবে না। অর্থাৎ বাংলাদেশে নির্বাচন হতেই হবে আর বাংলাদেশে যতক্ষণ না নির্বাচন হচ্ছে এবং স্থায়ী সরকার গঠন না হচ্ছে ততক্ষণ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনভাবেই স্বাভাবিক হবে না। এর থেকে বোঝাই যাচ্ছে ভারতের কাছে বাংলাদেশের নির্বাচনের গুরুত্ব অনেকটাই। শুধুমাত্র বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব নেই পাশাপাশি বৃহত্তর একটি দেশের সীমান্তে বাংলাদেশের যে সমস্ত কার্যকলাপ শুরু হয়েছে সেই সমস্ত বিষয়গুলিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সে দেশে একটি স্থায়ী সরকারের প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও ভারতের উপর নির্ভরশীল বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রিক অঞ্চল গুলিকে নিয়ে ভারত নিজের পরিকল্পনা গুলিকে বাস্তবায়িত করতে পারবে।
আর এই সমস্ত কারণে ভারতের বিদেশ মন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন এখন অগ্রাধিকার পাবে। নির্বাচন না হলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক রক্ষার দায় ভারত সরকারের নয়।
কূটনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, গত বছরের ৫ অগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে প্রায় আট মাসে ভারতের তুলনায় চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব প্রীতি বাড়িয়েছে ঢাকা। আবার পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতকে একাধিকবার নোটও পাঠিয়েছে তারা। এই আবহে ভারত সরকার বোঝানোর চেষ্টা করছে, যতই চিন বা পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠতা তৈরি না কেন, প্রকৃত পক্ষে ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক ভাবে ভারতই বাংলাদেশের প্রধান মিত্র।
উল্লেখ্য ৬ই এপ্রিল বাংলাদেশের সরকারি সফরে রাশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন সে দেশের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান। তবে একটা জল্পনা শুরু হয়েছিল যে সেই সময় ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল তিনি তার কোন পরিকল্পনা ব্যক্ত করেছিলেন কিনা।
অন্যদিকে, অনেকেই মনে করছেন, সে দেশের সেনাপ্রধান ওয়াকারুজ্জামান রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন। আর ১২ এপ্রিল তিনি দেশে ফিরতেই দেখা গেল চার দিনের শুভেচ্ছা সফরে রাশিয়ান নৌবাহিনীর তিনটি যুদ্ধজাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে।
আবার দেশে ফিরেই কট্টরপন্থীদের উদ্দেশেই যেন কড়া বার্তা দিলেন বাংলাদেশি সেনা প্রধান ওয়াকার উজ জামান। অর্থাৎ সবগুলিকেই সেনাপ্রধানের নতুন পরিকল্পনা বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। এখন দেখার বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয়ে ভারত তাদের পরিকল্পনাকে ঠিক কোন পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।
Discussion about this post