সোমবার ২০২৫ সালের রাজনৈতিক ফলাফল শীর্ষক একটি সম্মেলন আয়েজন করে ঢাকায় অবস্থিত রাশিয়ান দূতাবাস। সাংবাদিক সম্মেলন করে রাশিয়ান কর্মকর্তারা ও রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার খজিন রাশিয়া – বাংলাদেশ সম্পর্ক, রাশিয়া – বাংলাদেশ উন্নয়ন অবকাঠামো, রাশিয়া – বাংলাদেশ শিক্ষা নিয়ে বৈঠক করেন। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কর বিষয়টি। হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক একেবারে সাপে – নেউলে। শুধু ভারতই না বাদ পড়েনি রাশিয়াও। রাশিয়ার সাথেও সম্পর্ক খারাপ করেছে বাংলাদেশের পাকিস্তান প্রেমী ও ভারত বিরোধী অন্তর্বর্তী সরকার ডক্টর মহম্মদ ইউনুস। কিন্তু সম্প্রতি নানান ঘটনায় দেখা যাচ্ছে ভারতের সাথে গায়ে পরে যুদ্ধে জড়ানোর চেষ্টা করছে পড়শী দেশ বাংলাদেশ। সম্প্রতি বাংলাদেশের এক ছাত্র নেতা শরীফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর পর ঘটনার রহস্যভেদ না হলেও বাংলাদেশের তরফে সরাসরি সেই দোষ চাপানো হয়েছে ভারতের ওপরে। এমনকি এও বলা হচ্ছে, হাদি কে হত্যাকারীরা পালিয়ে ভারতে চলে এসেছে। অথচ এই আসামি কোথায় আছে তা বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও বলতে পারেননি। সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করেন হাদিকে হত্যা করা আসামিরা কোথায় এর উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা উত্তর দেন, আসামি কোথায় তা জানলে তো তাকে এতক্ষনে গ্রেফতার করে ফেলতে পারতাম। অর্থাৎ, সরকার নিজেও জানে না আসামি কোথায় অথচ তারা ভারতের ওপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের খালাস করছে এবং ভারতের বিরুদ্ধে উস্কানি দিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরী করার চেষ্টা করছে।
এই আবহে ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধু রাশিয়া ২০২৫ সালের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করলেন। সাংবাদিক বৈঠক করে রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে রাশিয়ার অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বার্তা দিয়ে বলেন, সাধারণ নির্বাচনের আগে অশান্ত বাংলাদেশে শান্তি ফিরুক এটাই চায় রাশিয়া। নির্বাচনের সহায়ক একটি গঠনমূলক পরিবেশ তৈরী হোক। এর পাশাপাশি পুতিনের দেশ চায় নয়া দিল্লির সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যত দ্রুত সম্ভব স্বাভাবিক করুক বাংলাদেশ। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে পারস্পরিক আস্থা জরুরি। দুই দেশের সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করতে চায় না মস্কো। একই সঙ্গে বাংলাদেশকে বার্তা দিয়ে বলেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আগে সমাধানের পথ খোঁজা ভালো।
বাংলাদেশের নির্বাচন দেখার জন্য ইতিমধ্যেই বিদেশী পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ করেছে মহম্মদ ইউনূসের সরকার। আমন্ত্রণ পেয়েছি রাশিয়াও। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের রুশ রাষ্ট্রদূত জানান, তারা অপেক্ষায় রয়েছেন আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রনের। আমন্ত্রণ পেলেই রাশিয়ার নির্বাচনী পর্যবেক্ষরা আসবেন বাংলাদেশে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের সাথেও যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। রাশিয়া ভারত ও বাংলাদেশের অত্যন্ত কাছের মিত্র দেশ। ফলে রাশিয়ান রাষ্ট্রদূতের এই বার্তা অত্যন্তই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও সুষ্ঠ, অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিয়ে শুধু ভারতই বার্তা দিচ্ছে না এই একই বার্তা দিয়েছে রাশিয়াও। সংবাদ সম্মেলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল, পুতিনের প্রতিনিধি তথা বাংলাদেশে অবস্থিত রাশিয়ান রাষ্ট্রদূতের দেওয়া বার্তায় জানানো ভারত – বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতির প্রশমন হওয়া জরুরি।
এ থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট যে, যে পক্ষই এই অস্থিরতা তৈরী করতে চাইছে তার আশা যে সফল হবে না তা স্পষ্ট। কারণ, ভারতের বন্ধু রাশিয়া এবং ভারতের একেবারে গায়ে পড়শী দেশ বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশের সবচেয়ে জনসমর্থন পাওয়া দল কোনটি তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না, তা সকলেরই জানা।












Discussion about this post