ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার মসনদে বসার পর এই প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে। জানা যাচ্ছে, সংস্কার, মানবাধিকার, গণতন্ত্র-সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশের ঢাকায় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল অ্যান চুলিক এবং মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের পূর্ব এশীয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু আর হেরাপ থাকছেন। এছাড়াও জানা যাচ্ছে, অ্যান্ড্রু হেরাপের সফরসঙ্গী হিসেবে মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসনও থাকছেন। মার্কিন মুলুকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বসার পরই এই প্রথম তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সফর করছেন। খবর পাওয়া যাচ্ছে, মার্কিন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক চুলিকের বাংলাদেশ সফরকালে সংস্কার বিষয়কে আমেরিকার সহায়তা এবং গণতান্ত্রিক পথে ফেরার বিষয় সম্পর্কে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। এই প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এমনকি উল্লেখযোগ্যভাবে খবর পাওয়া যাচ্ছে, বিএনপি, জামায়াত-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তারা।শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন তারা।
তারা আসছেন মূলত বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে। তার মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা সংকট। সত্যি কি এই কয়েকটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর সীমাবদ্ধ থাকবে তাদের আলোচনা, নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও উদ্দেশ্য? রাজনৈতিক মহলে যা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে। কিছুদিন আগে জাতি সংঘের মহাসচিব বাংলাদেশ সফর করে গিয়েছেন। জাতি সংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস আবদার
করেছিলেন, মায়ানমারের রাখাইন অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশকে করিডোরের জন্য প্রস্তাব করেছেন। এবং সেটি বানাদেশ প্রায় মেনে নিচ্ছে, সূত্রের খবর। এমনকি জানা যাচ্ছে, এই করিডোর ব্যবহার করা হবে মায়ানমারে মানবতা সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য। এই প্রস্তাবের ভিতরেও কিছু থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এর জন্য বার্মা অ্যাক্ট সম্পর্কেও জেনে রাখা ভালো। মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বার্মা অ্যাক্ট পাস হয়। এই আইনের কারণে মায়ানমার অঞ্চলে সংঘর্ষ আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এই অবস্থায় কোনও পক্ষে শামিল না হওয়া বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত ভালো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এই পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এর মানবিক ও উন্নয়ন সাহায্যের ধারায় অনেক পরিবর্তন আনতে পারে। তেমনটাই বলা আছে।
এখন এই তিন মার্কিন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার বাংলাদেশ সফর এবং আলোচনার বিষয় পাশাপাশি কাদের সঙ্গে কতক্ষণ আলোচনায় বসছেন, তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, চাপে পড়তে পারেন ইউনুস। এটার মধ্যে ট্রাম্পের কৌশলী চালও দিচ্ছেন রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষকরা। কারণ বাংলাদেশের যেভাবে জঙ্গিদের আখড়া হয়ে উঠছে, সেই বিষয়টি তাদের নজরে এলে মহাবিপদে পড়তে পারেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা। এখন দেখার, শেষমেশ কি হয়।
Discussion about this post