এই মুহূর্তে সরকারের সঙ্গে সেনাপ্রধান বিভিন্ন বিষয়ে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যেমন কিছুদিন আগেই আওয়ামী লীগের সমস্ত কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আর তাতে নাকি সম্মতি পোষণ করেননি সেনাপ্রধান। শুধু তাই নয়, কিছুদিন আগে বাংলাদেশকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করতে দিয়েছেন বাংলাদেশের বর্তমান সরকার। যার মধ্যে দিয়ে রাখাইন প্রদেশের মানবিক সহায়তা পাঠাতে পারবে রাষ্ট্রসংঘ। আর সেটাতে নাকি সম্মতি দেয়নি সেনাপ্রধান। অনেকে আবার এটাও বলছে, সেনাপ্রধানের সম্মতি ছাড়া এই কাজ প্রায় অসম্ভব। অনেকে মনে করেন, দেশে যা ঘটছে, সেটা সেনাপ্রধানের ইশারাতে ঘটছে। আসলে গত বছর ৫ই অগাষ্ট শেখ হাসিনার পতনের পর সেনাপ্রধান ওয়াকার বলেছিলেন, আমি দায়িত্ব নিচ্ছে। যদিও তিনি সরাসরি দায়িত্ব নেননি। কিন্তু তার সম্মতিতে দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। কেউ কেউ বলেন, আন্দোলন নয়, সেনাবাহিনীর ইচ্ছেতেই বিগত সরকারের পতন ঘটেছে।
প্রায় দশ মাস কেটে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই নিয়ে ভারত একটি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বলা হয়েছে, কোনরকম প্রক্রিয়া ছাড়া এইভাবে একটি দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা উদ্বেগ জনক। তবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েই ক্ষ্যান্ত থাকেনি ভারত। শোনা যাচ্ছে, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানকে ফোন করে সতর্ক করে দিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন ধারণা করাই যায়, যখন সরকারের বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন ওয়াকার এবং অন্যদিকে তাকে ফোন করে কোনও বার্তা দেওয়া হলে কিছু একটা ঘটতে চলেছে, সেটা অনুমেয়। অন্যদিকে কেউ কেউ বলছে, ভারত এবং বৈশ্বিক চাপে সেনাপ্রধান কি বাংলাদেশের ক্ষমতার হাতে নেবেন?
কারণ ভারতের তরফেযও রণবীর জাসওয়াল জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে একটি নির্বাচন অতি দ্রুত প্রয়োজন, অন্তত দেশের মানুষের জন্য। সেনাপ্রধান ও এর আগে তার বিভিন্ন বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের সুষ্ঠু গণতন্ত্র এবং নির্বাচনের কথা বলেছেন। কিন্তু তাই নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও চাইছে নির্বাচন করাতে। কিন্তু ইউনুস সরকার গড়িমওসি করছেন। অনেকে বলছেন, ক্ষমতায় থেকে যেতে চান দীর্ঘ সময়। আর সেই কারণেই নানা রকম কারণ দেখিয়ে এই গড়িমসি। এদিকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ আপাতত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। আর এই দলকে নিয়ে অংশগ্রহণ করতে না দিলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে প্রবল ভাবে বাংলাদেশের অন্দরে, সেটাও বোঝাই যাচ্ছে। এদিকে অনেকে বলছেন, আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ হওয়ার পক্ষে নন সেনাপ্রধান। কাজেই ক্ষমতা ধরে রাখতে হয় তো নিজের হাতেই নিয়ে নিতে পারেন বাংলাদেশের শাসনভার। তবে বাংলাদেশের এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতির যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে যে কোনও মুহূর্তে পরিস্থিতি মোর নিতে পারে। এখন দেখার, শেষমেশ কি হয়!
Discussion about this post